ছোট যানে ঈদযাত্রা, ভিড় দুই নৌপথে

ফেরিতে উঠতে ঈদে ঘরমুখী মানুষের ঢল। গতকাল সকালে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটে।  ছবি: সংগৃহীত
ফেরিতে উঠতে ঈদে ঘরমুখী মানুষের ঢল। গতকাল সকালে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটে। ছবি: সংগৃহীত

করোনা সংক্রমণের কারণে ঈদে ঘরমুখী মানুষকে ঠেকাতে মহাসড়কগুলোতে ছিল পুলিশের তল্লাশিচৌকি। বন্ধ ছিল রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া–মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া এবং মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি–মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথ। তবে হঠাৎ করেই বাড়ি ফেরার পথে পুলিশি বাধা উঠে গেছে। এতে গতকাল শুক্রবার থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাসে করে গ্রামের বাড়ি যেতে শুরু করেছে মানুষ। ভিড় বেড়েছে দুই নৌপথেও।

সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রথম আলোপ্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

দৌলতদিয়া–পাটুরিয়া নৌপথে আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, যে যেখানে আছে, সেখানে ঈদ করার নির্দেশনা থাকায় দফায় ফেরি বন্ধ রাখা হয়। আবার ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণেও গত বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ফেরি বন্ধ রাখতে বলা হয়। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে পুনরায় ফেরি চালুর নির্দেশ আসে।

ঘাটসংশ্লিষ্ট লোকজন জানান, ফেরি চালু হলে উভয় ঘাটে আটকে থাকা কয়েক শ গাড়ি ও কয়েক হাজার যাত্রী দ্রুত নদী পাড়ি দেয়। বিশেষ করে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতে ঈদে ঘরমুখী মানুষের ব্যাপক ভিড় ছিল।

গতকাল কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে দেখা যায়, শিমুলিয়া থেকে ফেরিতে করে আসতে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। যাত্রীরা ফেরিতে পদ্মা পাড়ি দিয়ে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে এসে ছোট ছোট যানে করে গন্তব্যে ছুটছে। সকাল ৯টার পর থেকে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেড়ে গেলেও দুপুর ১২টার দিকে তা কমে আসে।

খুলনাগামী যাত্রী হায়দার আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকায় অনেক দিন ঘরবন্দী ছিলাম। এভাবে তো আর থাকা যায় না। গ্রামের বাড়িতে সবাই আছে। তাই করোনার ঝুঁকি নিয়েই ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছি।’

বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. আবদুল আলিম প্রথম আলোকে জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রাত ১১টা থেকে তাঁরা ফেরি চলাচল শুরু করেন। দুই ঘাটের টার্মিনালে আটকা পড়া পণ্যবাহী ও ব্যক্তিগত যানবাহন ভোররাতের মধ্যেই পার করা হয়। সকালে ঢাকা থেকে আসা যাত্রী বেশ ভিড় থাকলেও দুপুর ১২টার পরে তা কমে যায়।

মহাসড়কে ছোট যান

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে গতকাল অনেক ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাস চলতে দেখা গেছে। মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি অংশে পুলিশের কোনো তল্লাশিচৌকি দেখা যায়নি।

গতকাল বিকেলে মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বলদাখাল এলাকায় কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িতে করে চাঁদপুর যাচ্ছিলেন। তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছেন। পথে পুলিশের কোনো তল্লাশিচৌকি দেখেননি তাঁরা।

দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল ইসলাম খান বলেন, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ঘরমুখী মানুষ মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল করতে পারবে।

এদিকে গতকাল দুপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের করটিয়া থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে দেখা যায়, কিছুক্ষণ পরপর দু–একটি ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস অথবা পণ্যবাহী ট্রাক চলছে। কালিহাতীর এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কথা হয় ঢাকা থেকে ঈশ্বরদীগামী যাত্রী রেজওয়ান আহমেদের সঙ্গে। তিনি জানান, মাত্র পৌনে দুই ঘণ্টায় ঢাকার উত্তরা থেকে তিনি ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এলেঙ্গা পর্যন্ত চলে এসেছেন। কোথাও যানজটে পড়তে হয়নি।

এলেঙ্গায় দেখা যায়, সেখান থেকে মোটরসাইকেলে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন গন্তব্যে। এলেঙ্গা থেকে বগুড়া পর্যন্ত প্রতিজন যাত্রীর ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এক হাজার টাকা করে।