টিন দিয়ে ঘিরে পাহাড় কাটা চলছে, বহুতল ভবন হবে

করোনার লকডাউনের ফাঁকে নগরের প্রাণকেন্দ্র এস এস খালেদ সড়কে টিনের ঘেরাও দিয়ে পাহাড় কাটছেন কিছু মানুষ। বহুতল ভবন নির্মাণের প্রাথমিক কাজের অংশ হিসেবে এই পাহাড় কাটা চলছে। এস এস খালেদ সড়কের রীমা কমিউনিটি সেন্টারের বিপরীতে দুই সপ্তাহ ধরে চলছে এই পাহাড় কাটা।

প্রায় ৭০ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট প্রশস্ত পাহাড় শ্রেণির এই জায়গাটি কেটে সমতল করা হচ্ছে। মাসখানেক আগে টিন দিয়ে চারদিকে ঘেরা হয়েছে জায়গাটি। এরপর ধীরে ধীরে পাহাড় কাটা শুরু হয়। এটি গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকের পাহাড় নামে পরিচিত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এস এস খালেদ সড়কের এবিসি টাওয়ারের পাশে লম্বা করে টিনের ঘেরাও দেওয়া রয়েছে। বাইরে থেকে ভেতরে কিছুই দেখা যায় না। পাশের ভবনের ছাদে উঠে দেখা যায়, ভেতরে আট থেকে দশজন শ্রমিক পাহাড় কাটায় ব্যস্ত। পাহাড় কেটে মাটিগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।

মাঝখানে একবার পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন পাহাড় কাটার ওই স্থানটি পরিদর্শন করেছিলেন। তখন পাহাড় কাটা কিছুদিন বন্ধ ছিল। আজ শনিবার থেকে আরও বেশি শ্রমিক দিয়ে নতুন উদ্যমে পাহাড় কাটা চলছে।
এবিসি টাওয়ারের একাধিক বাসিন্দা জানান, জায়গাটি পুরোটাই পাহাড় ছিল। এখন কেটে কিছুটা সমতল করা হয়েছে। আরও অনেক বাকি রয়েছে। করোনার লকডাউনের ফাঁকে এই কাজ করা হচ্ছিল। জায়গাটির মালিক দারদুস শাহ নামের এক চিকিৎসক। তাঁর কাছ থেকে কয়েকজন এটা কিনে নেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, একটা সমিতিভুক্ত হয়ে বিভিন্ন পেশার কিছু মানুষ জায়গাটি সমতল করে বহুতল ভবন নির্মাণকাজে হাত দিয়েছেন। মূল সড়কের পাশে হওয়ায় জায়গাটি খুবই লোভনীয়। এ জন্য জোটবদ্ধ হয়ে পাহাড় কেটে সমতল করার চেষ্টা চলছে বলে সমিতির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান। এই জোটের একজন সনজীব দত্ত নামের এক ব্যক্তি। মূলত পাহাড় কাটার বিষয়টি তিনি তদারক করছিলেন। পাহাড় কাটার অভিযোগে ইতিমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর তাঁকে নোটিশও দিয়েছে। তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক মো. নুরুল্লাহ নূরী ওই পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘নানা দিক থেকে এই পাহাড় কাটার বিষয়টি জেনেছি। গত রোববার সরেজমিনে গিয়ে পাহাড় কাটার প্রমাণ পেয়েছি। পাহাড় কাটার সঙ্গে বেশ কয়েকজন জড়িত। তবে সনজীব দত্ত নামের একজনের নাম পেয়েছি। তাঁকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসক দারদাউস শাহ নামে একজনকেও নোটিশ দেওয়া হয়। মূলত তিনি জমিটির মালিক। তাঁর কাছ থেকে সনজীবরা জায়গাটি কিনে নেন।’

টিনের ঘেরের ভেতর কী পরিমাণ পাহাড় কাটা হয়েছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা করা যায়নি। অধিদপ্তর তা পরিমাপের চেষ্টা করছে। প্রাথমিকভাবে জায়গাটি লম্বায় ৭০ ফুট এবং প্রস্থে ৩০ থেকে ৪০ ফুটের মতো বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। আগামী ১ জুন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামে এর শুনানি হবে।