'নয়া কাপড় কিননু ঠিকেই, কাফনের সাদা কাপড়'

এই ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হয় কিশোর হেলাল ও তরুণ শরিফুল ইসলাম। বরাতি তেরমাইল এলাকা, তারাগঞ্জ, রংপুর, ২৩ মে। ছবি: প্রথম আলো
এই ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হয় কিশোর হেলাল ও তরুণ শরিফুল ইসলাম। বরাতি তেরমাইল এলাকা, তারাগঞ্জ, রংপুর, ২৩ মে। ছবি: প্রথম আলো

কিশোর ছেলেটির নাম হেলাল উদ্দিন (১৪)। সে পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। কয়েক দিন থেকে বাবার কাছে ঈদের নতুন পোশাক কেনার জন্য বায়না ধরছিল সে। অবশেষ বাবা খোরশেদ আলমের অনুমতি মেলে। নতুন পোশাক কেনার জন্য ছেলের মামাতো ভাই খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শরিফুল ইসলামের (২৪) সঙ্গে হেলালকে তাঁরাগঞ্জ উপজেলা শহরে যেতে বলেন।

আজ শনিবার সকালে নিজ বাড়ি থেকে বাইসাইকেলে করে দুই ভাই তারাগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরাতি তেরমাইল এলাকায় রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে একটি ট্রাক তাঁদের পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খেতে পড়ে যায়। এ ঘটনায় হেলাল ও শরিফুল ঘটনাস্থলেই মারা যান।পুলিশ জানায়, সৈয়দপুরগামী মালবাহী আজাদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ট্রাক পেছন থেকে সাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহত হেলালের বাবা তারাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ থানার সামনে ছেলের লাশ নিতে এসে কেবলই বিলাপ করছিলেন, আর বলছিলেন, ‘নয়া কাপড় কিননু ঠিকেই, কাফনের সাদা কাপড়। মোর দুই ছেলে, দুই মেয়ে নিয়া সুখের সংসার আছল। কিন্তু সব কাড়ি নেইল ট্রাক।’

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত হেলাল উদ্দিন বিড়াবাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। আর একই গ্রামের বাসিন্দা হেলালের মামাতো ভাই শরিফুল ইসলাম খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান ও ইউএনও আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ বিষয়ে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, ট্রাকটির চাপায় ওই দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। ট্রাকটি পুলিশের হেফাজতে আছে। চালককে ধরার চেষ্টা চলছে।