বগুড়ায় মাছের বাজারে করোনার সংক্রমণ

বগুড়া জেলা শহরের চাষি বাজারের একটি মাছের আড়তের ১১ জন কর্মচারীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় আজ শনিবার একদিনে সর্বোচ্চ ২৫ জন সংক্রমিত হলেন। আর গত প্রায় দেড় মাসে ১৬৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হলো।

নতুন শনাক্ত হওয়া ২৫ জনের বেশির ভাগই আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সদরের ১২, শাজাহানপুরের ৫, শেরপুরের ৩, গাবতলীর ২ এবং কাহালু, দুপচাঁচিয়া ও সোনাতলা উপজেলার ১ জন করে রয়েছেন।

ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরিতে বগুড়ার ১৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে ২৫ জনের প্রতিবেদন ‘পজিটিভ’ এসেছে। একই দিন জয়পুরহাটের ২৪ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে চারজনের পজিটিভ এসেছে। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা একটি নমুনা ‘নেগেটিভ’ হয়েছে।

ডেপুটি সিভিল সার্জন জানান, গত বৃহস্পতিবার জেলা শহরের ঠনঠনিয়া হাঁড়িপাড়া এলাকার ৪৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়। তিনি চাষি বাজারে সতীশ মৎস্য আড়তের কর্মচারী। পরে এই আড়তের ১৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। তাঁরা সবাই অন্যের সংস্পর্শে এসে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।

চাষি বাজারের কয়েকজন আড়তদার বলেন, চাষি বাজারের প্রতিদিন ভোরে কয়েক হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় হয়। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে মাছ বিক্রি করতে আসেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পরও এখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে বেচাবিক্রি করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ কারণে বাজার বন্ধ রাখার অনুমতি চেয়ে আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু প্রশাসন বাজার বন্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। খোলা জায়গায় বাজার সরিয়েও নিতেও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ বলেন, চাষি বাজার বন্ধ করলে মাছের সরবরাহে ঘাটতি হবে। এ কারণে বাজার বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মাছের আড়তের ১১ জন ছাড়া শহরের জহুরুলনগর এলাকার এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি শহরের একটি বিপণিবিতান থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। শাজাহানপুরের মাঝিড়ায় ঢাকাফেরত এক দম্পতিসহ পাঁচজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শেরপুরের শাহপাড়ার এক দম্পতি এবং একজন পুলিশসদস্য করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁরা ঢাকাফেরত। গাবতলীর দুজন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এ ছাড়া দুপচাঁচিয়ার তালোড়ায় ঢাকাফেরত একজন, সোনাতলা সদরের একজন ও কাহালুর নারহট্ট এলাকার একজন করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এর আগে গত শুক্রবার এ জেলায় ২৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে সংরক্ষিত আসনের সাবেক সাংসদ কামরুন্নাহার পুতুল মারা যান।