নদীভাঙন থেকে বাড়ি সরাতে গিয়ে যুবকের মৃত্যু

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার নিজেদের বাড়ি সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবু সাঈদ (২৩) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে লালমনিরহাটের সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর গোকুন্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আবু সাঈদ চর গোকুন্ডা গ্রামের কৃষিশ্রমিক দুলাল মিয়া ও আফরোজা বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে ছিলেন। এই দম্পতির দুই মেয়ে রয়েছে।
আফরোজা বেগম বলেন, ‘স্বামী মানুষের জমিত কামলা দিয়া কষ্টে সংসার চালায়। মোর ছাওয়া (ছেলে) আবু সাঈদ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করি ঢাকাত আরও পড়তে ভর্তি হইছে। আবু সাঈদ কইত, মা আরেকটা পাস দিলে উয়ার ভালো চাকরি হইবে, উয়ায় কইত মোর ছোট মেয়ে উম্মে হানীক অনেক দূর পড়াইবে, বাপোক আর কামলা দিবার দিবে না, সংসারের সব দায়িত্ব সাঈদ নিবে। এলা সাঈদ চলি গেল, সব কিছু শ্যাষ হইল, তিস্তাত বাড়িও গেল, হামরা এলা কেমন করি বাঁচিম বাহে।’

সাঈদ রংপুর পলিটেকনিক থেকে ডিপ্লোমা পাস করে ঢাকায় বিএসসি পড়তে যান। করোনা সংকট দেখা দিলে মার্চ মাসের মাঝামাঝি তিনি বাড়িতে চলে আসেন। আজ সকালে তিস্তা নদীর ভাঙনে তাঁদের বাড়ি ভাঙতে শুরু করে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলে ঘর সরাতে গিয়ে অসাবধানবশত আবু সাঈদ বৈদ্যুতিক তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাড়ি থেকে ৫০০ গজ দূরে যাওয়ার পর মারা যান।

গোকুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান ও লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ঘটনার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দরিদ্র পরিবারটির অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, কোনো অভিযোগ নেই মর্মে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া যুবকের দাফনের ব্যবস্থা করতে পরিবারের সদস্যদের ও ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছি।