করোনা জয় করে কাজে ফেরার অপেক্ষায় চার স্বাস্থ্যকর্মী

ফেনীর পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চার নারী স্বাস্থ্যকর্মী (নার্স) করোনা জয় করে কাজে ফেরার অপেক্ষায় আছেন। তাঁরা হলেন অঞ্জলী রানী দাস (৫৬), সালমা সুলতানা চৌধুরী (৪৯), পপি রানী মন্ডল (২৬) ও পলি রানী দাস (২৫)। তাঁরা চারজনই ফেনীর পরশুরাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলেন। করোনা আক্রান্তের পর থেকে ছুটিতে আছেন।

পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল খালেক বলেন, ওই চার স্বাস্থ্যকর্মী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রোগীর সেবা করাই তাঁদের কাজ। নিয়মিত তাঁরা সেই কাজই করেছিলেন। তাঁদের একজনের সামান্য জ্বর–কাশি দেখা দেয়। পরে ১১ মে তাঁরা চারজনসহ পরশুরাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেশ কয়েকজনের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১৭ মে পাওয়া প্রতিবেদনে ওই চার নারী স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা পজিটিভ আসে।

এরপর থেকেই থেকে অঞ্জলী রানী দাস পরশুরাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে নিজ বাসায়, সালমা সুলতানা চৌধুরী ফুলগাজীতে নিজ বাড়িতে, পপি রানী মন্ডল ও পলি রানী দাস স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বরাদ্দ করা বাসায় হোম আইসোলেশনে ছিলেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চিকিৎসা নেন।

হোম আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় ১৭ ও ১৯ মে নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে দুদফা তাঁদের করোনা নমুনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। এরপর ২০ মে ফেনীর সিভিল সার্জন তাঁদের সুস্থ ঘোষণা করে নিয়ম অনুযায়ী, ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশ দেন। বর্তমানে তাঁরা চারজনই নিজ নিজ বাসভবনে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

এ বিষয়ে করোনাজয়ী অঞ্জলী রানী দাস বলেন, তাঁরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত রোগীদের সেবা দিয়ে আসছেন। কীভাবে তাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন বুঝতে পারেননি। স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত ওষুধ খেয়ে তিনি সুস্থ হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, তাঁর ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে। পাশাপাশি ঘরে থেকেও স্বামী ও ছেলেমেয়েদের সঙ্গে দেখা করা যায়নি বলে বেশি কষ্ট হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে মুঠোফোনে।

করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ায় বেশ আনন্দিত বলে জানান সালমা সুলতানা চৌধুরী। পপি রানী মন্ডলের বাড়ি গাজীপুর ও পলি রানী দাসের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীতে। তাঁরা দুজন হাসপাতাল কোয়ার্টারে থাকেন। তাঁরা জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, সহকর্মী ও বন্ধুরা তাঁদের সবচেয়ে বেশি তত্ত্বাবধান করেছেন। ফলে আজ তাঁরা এখন সুস্থ। এখন শুধু কাজে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায়। আগামী ২ জুন তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ। তাই কাজে যোগ দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।