পানির স্রোত ও কচুরিপানার চাপে ভাঙল বাঁশের সাঁকো

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রচুর বৃষ্টিতে পানির স্রোত বাড়ার পাশাপাশি কচুরিপানার কারণে লৌহজং নদের কুমুদিনী হাসপাতাল ঘাটে থাকা বাঁশের সাঁকো ভেঙে যায়। আজ বুধবার সকালে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রচুর বৃষ্টিতে পানির স্রোত বাড়ার পাশাপাশি কচুরিপানার কারণে লৌহজং নদের কুমুদিনী হাসপাতাল ঘাটে থাকা বাঁশের সাঁকো ভেঙে যায়। আজ বুধবার সকালে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের কুমুদিনী হাসপাতাল ঘাটে লৌহজং নদের ওপর থাকা বাঁশের সাঁকো বৃষ্টির কারণে পানির স্রোত আর কচুরিপানায় ভেঙে গেছে। এতে মির্জাপুরের দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ৩৫ গ্রামের মানুষের সঙ্গে সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা মানুষকে প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে আসতে হচ্ছে।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে ও আজ বুধবার ভোরে কালবৈশাখীর সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টি হয়। এতে উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবহমান বংশাই ও লৌহজং নদের পানি বেড়ে যায়। লৌহজং নদের পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উজান থেকে কচুরিপানা আসতে থাকে। যা ভাটির দিকে যেতে নদের ওই স্থানে থাকা বাঁশের সাঁকোতে বাধাগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় আজ সকাল থেকে লোকজন ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে গন্তব্যে চলাচল করতে থাকেন। তবে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কচুরিপানার সঙ্গে স্রোতের অতিরিক্ত চাপে সাঁকোটি ভেঙে যায়। এতে জনসাধারণের চলাচলে মারাত্মকভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এই সাঁকো দিয়ে মির্জাপুর পৌর এলাকার সাহাপাড়া, সরিষাদাইড়, আন্ধরা ছাড়াও মির্জাপুরের দক্ষিণাঞ্চলের ভাওড়া, বহুরিয়া, উয়ার্শী ইউনিয়নের অন্তত ৩৫ গ্রামের লোকজন হেঁটে নদ পার হয়ে রিকশা, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়িসহ নানা ধরনের যানবাহনে গন্তব্যে যান। সাঁকোটি দিয়ে নিয়মিত মোটরসাইকেলও চলাচল করে। কুমুদিনী হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং স্কুল ও কলেজ, ভারতেশ্বরী হোমসের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই নদের দক্ষিণ পারে থাকেন। তাঁরাও এই সাঁকো ব্যবহার করেন। এ ছাড়া সাঁকোটি দিয়ে অনেকে মোটরসাইকেলযোগে পার্শ্ববর্তী ঢাকার ধামরাই ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়াসহ বিভিন্ন গন্তব্যেও যান। কিন্তু সাঁকোটি হঠাৎ ভেঙে যাওয়ায় মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পারাপারের জন্য কোনো নৌকারও ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না।

এদিকে নদের ওই ঘাট জেলা পরিষদ থেকে প্রতিবছর ইজারা দেওয়া হয়। অজ্ঞাত কারণে সেখানে স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৪৯ বছরেও সেতু নির্মাণ হয়নি।

মির্জাপুরের সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা তন্ময় চক্রবর্তী জানান, সাঁকোটি মেরামত করতে দুই দিন সময় লাগবে। স্থানীয়দের হাসপাতাল বা উপজেলা সদরে যেতে প্রায় তিন কিলোমিটার ঘুরে পাহাড়পুর বা পোষ্টকামুরী সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল মালেক বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।