'ভয় না পেয়ে ওষুধ-পথ্য সময়মতো খেয়েছি'

কুমিল্লার দেবীদ্বারের ৯ ও শেরপুরের নালিতাবাড়ীর ৪ পুলিশ সদস্য করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন। তাঁরা এখন বাসায় কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। কোয়ারেন্টিন শেষ হলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন।

দেবীদ্বারে সুস্থ হওয়া ৯ জন হলেন তানভীর পাটোয়ারী (২৭), কামাল হোসেন (৩৭), মো. ওয়াহেদুল (৩৫), রায়হান উদ্দিন (৫৩), সমর আলী (৪৭), মো. আলাউদ্দিন (২৯), আবু তাহের (৫৫), গিয়াস উদ্দিন (২৮) ও আবদুর রশীদ (৫৫)। তাঁদের মধ্যে তানভীর গত বুধবার সুস্থ হয়েছেন। বাকিরা গত সোমবার সুস্থ হন।

জানতে চাইলে দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আনোয়ার বলেন, কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হলে ওই ৯ জন কাজে যোগ দেবেন।

দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় গত সোম ও বুধবার ওই ৯ পুলিশ সদস্য ছাড়া আরও ১৬ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন। বুধবার সুস্থ হয়েছেন দেবীদ্বার নিউমার্কেট পানবাজার এলাকার অর্চনা রানী দে (৩৫), অনিক চন্দ্র দে (১৭) ও সুজন দাস (২৫)। আর সোমবার সুস্থ হয়েছেন বাগুর গ্রামের সাথী আক্তার (২৪), রেহানা বেগম (৫২), আবুল কালাম (৪৫), সেলিনা আক্তার (৪৫) ও তাসমিয়া জাহান (১৬), নবীয়াবাদ গ্রামের গৌরাঙ্গ (৫২), সারওয়ার (৩৬), লায়লা আক্তার (২৬), মনিরুল ইসলাম (৪৯) ও মনিরুল ইসলাম (৩৩), দেবীদ্বার নিউমার্কেট এলাকার পুষ্পিতা দে (১৫) ও সৈকত ঘোষ (২৪) এবং গুনাইঘরের নুরুল ইসলাম (৫৫)।

সুস্থ হওয়া দেবীদ্বার থানার পুলিশ সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ‘করোনা শনাক্ত হওয়ার পর আমি মানসিকভাবে চাঙা ছিলাম। গরম পানির ভাপ, আদা, লেবু ও মসলা দিয়ে চা পান, গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা, আমিষজাতীয় খাবার খেয়েছি। ভয় না পেয়ে ওষুধ ও পথ্য সময়মতো খেয়ে সুস্থ হয়েছি।’

জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আহাম্মদ কবীর গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘করোনা শনাক্ত হওয়ার পর আমাদের তত্ত্বাবধানে ওই ২৫ জনকে সেবা দেওয়া হয়। তাঁরা নির্দেশনা মেনে আইসোলেশনে ছিলেন। পরপর দুবার নেগেটিভ আসায় তাঁদের সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা শনাক্ত হওয়ার এক মাস পর তাঁরা সুস্থ হলেন।’

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে সুস্থ হওয়া চারজন হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সুমন মিয়া ও মামুনুর র‌শিদ এবং পু‌লিশ সদস্য আশিকুর রহমান ও ‌দিল‌রুবা বেগম। গত বুধবার তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

থানা-পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, করোনা পরীক্ষার জন্য ১০ মে নালিতাবাড়ী থানার ৩০ জন পুলিশ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১৭ মে তাঁদের ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। তাঁদের মধ্যে সুমন ও আশিকুরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশনে রাখা হয়। বাকি দুজনকে বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়। এরপর দুবার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার নমুনা নেগেটিভ আসায় বুধবার তাঁদের আইসোলেশন থেকে মুক্ত করা হয়। সেদিনই তাঁরা থানায় আসেন। পরে তাঁদের বাড়িতে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়।

জানতে চাইলে নালিতাবাড়ী থানার ওসি বছির আহমেদ বলেন, ওই চারজন নিয়ম মেনে খাবারের পাশাপাশি দিনে একাধিকবার গরম পানি পান করা, গড়গড়া করা ও ভাপ নিতেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে ও আল্লাহর অশেষ রহমতে তাঁরা করোনাযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। ৪ জনকে আরও ১৪ দিন বাড়িতে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন।