মাদারীপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ তে পৌঁছাল

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরে আরও ১১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলার চারটি উপজেলায় কোভিড-১৯-এ আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ তে পৌঁছাল। এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ ২১ জন আক্রান্তের ঘটনা ঘটে।

আজ শুক্রবার আসা নমুনা পরীক্ষার ফলাফল থেকে জানা যায়, সদর উপজেলায় এক সরকারি নার্সসহ সাত জন, কালকিনি উপজেলায় দু জন, রাজৈর ও শিবচর উপজেলায় একজন করে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
আজ দুপুর বেলা সাড়ে ১২টায় মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৮ মার্চ সারা দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া তিনজনের একজন ছিলেন মাদারীপুরে ইতালিফেরত এক প্রবাসী।এরপর গত দুই মাসে রোগী শনাক্ত হয় ৫০ জন। গত ১৩ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত এই ১৬ দিনে শনাক্ত হয় আরও ৫০ জন।

জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে শিবচর উপজেলাকে 'হটস্পট' হিসেবে ঘোষণা করা হলেও বর্তমানে জেলায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটছে রাজৈর উপজেলায়। এ উপজেলায় সবশেষ ৩৫ জন শনাক্ত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।আর শিবচর উপজেলায় ২৭ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন দুজন।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র মতে, গত ২৪ ঘন্টায় এ জেলায় ১৭০ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদন আসে। এর মধ্যে ১১ জনের পজিটিভ এসেছে। তাঁদের মধ্যে সদর উপজেলায় সদর হাসপাতালের এক নার্স, তিন বছরের এক শিশু ও একই পরিবারের তিনজনসহ সাত জন শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া কালকিনিতে ২২ বছর বয়সী দুই তরুণ, শিবচরে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর ও রাজৈরে ২০ বছর বয়সী এক তরুণ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। জেলার সরকারি হাসপাতাল, হোম আইসোলেশন সহ ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন ৩৪ জন। মারা গেছেন দুজন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৫৩ জন।

এদিকে গত ১৬ এপ্রিল লকডাউনের আওতায় আনা হয় মাদারীপুর জেলাকে। যা এখনও বহাল থাকলেও বাস্তবে লকডাউন মানছে না কেউ। লকডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ার পর গত ৬ মে'র পর থেকেই জেলায় সব ধরণের দোকানপাট খুলেছে। হাট-বাজারে মানুষের সমাগম বেড়েছে।বেশিরভাগ মানুষই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাচল করছেন না। গণপরিবহন বাযাত্রীবাহী বাস ছাড়া সব ধরণের যানবাহন চলাচল করছে মাদারীপুরে। এতে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি খান মোহাম্মদ শহীদ প্রথম আলোকে বলেন, 'করোনাভাইরাস থেকে মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই লকডাউন করা হয়। কিন্তু লকডাউন বলতে আমরা যেটা বুঝি, বাস্তব চিত্রে কিছুই এখন আর নেই। শুরুতে লকডাউন মানা হলেও ৬ মে'র পর থেকে সবাই নিয়ম ভঙ্গ করে চলাচল করছেন। আমাদের নাগরিকদের সচেতন হতে হবে, সুরক্ষা পোশাকসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনের লকডাউন নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।'

জানতে চাইলে জেলার সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, 'জেলায় বর্তমানে ১০০ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সদর ও রাজৈর উপজেলায় হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা ওই এই দুই উপজেলা বিশেষ নজরদারিতে রেখেছি।'
সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ঈদের আগে ঢাকা থেকে বহু মানুষ গ্রামে আসেন। তাঁরা এসেই স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ইচ্ছে মতো মিলেমিশে ঈদ পালন করেছেন। এর ফলেই সংক্রমণ বাড়ছে। যাঁরা এখন আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁরা বেশির ভাগই গ্রামের বাসিন্দা।'