কাল থেকে চলবে বনলতা এক্সপ্রেস, টিকিট অনলাইনে

ট্রেনের টিকিট কাটতে সকাল থেকে কাউন্টারে অপেক্ষায় ছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু দুপুরে জানানো হয় টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে। পরে সবাই চলে যান। ছবি: প্রথম আলো
ট্রেনের টিকিট কাটতে সকাল থেকে কাউন্টারে অপেক্ষায় ছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু দুপুরে জানানো হয় টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে। পরে সবাই চলে যান। ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী থেকে অর্ধেক আসন ফাঁকা নিয়ে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন আগামীকাল রোববার সকাল সাতটায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এই ট্রেনের টিকিট কাটতে ভোর থেকে কাউন্টারে অপেক্ষা করেন যাত্রীরা। পরে স্টেশনের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়, শুধু অনলাইনে টিকিট বিক্রি হবে। বেলা একটার দিকে যাত্রীরা ফিরে যান।
স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী থেকে কাল বনলতা এক্সপ্রেস নিয়মিত ঢাকা-রাজশাহীর মধ্যে চলাচল করবে। এই ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা ৯২৮। এর মধ্যে টিকিট বিক্রি করা হবে ৪৬২টি। বাকি আসন সামাজিক দূরত্ব রক্ষার জন্য খালি যাবে। আর আগামী ৩ জুন থেকে একইভাবে অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে রাজশাহী-খুলনার মধ্যে কপোতাক্ষ ও রাজশাহী-রাজবাড়ীর মধ্যে মধুমতী এক্সপ্রেস ট্রেন চলবে।
কয়েক দিন আগে থেকেই বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন রাজশাহী থেকে যাওয়ার খবর প্রচারিত হয়। এ জন্য যাত্রীরা আজ ভোর থেকেই ট্রেনের টিকিটের জন্য স্টেশনে এসে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে পড়েন।
মমতা (৩৫) নামের একজন যাত্রী কাউন্টারের সবার আগে বসেছিলেন। তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার তিনি এসে খোঁজ নিয়ে গেছেন। তখন তাঁকে বলা হয়েছিল সকাল নয়টা থেকে কাউন্টারে টিকিট দেওয়া হবে। সকাল সাতটায় এসে তিনি কাউন্টারে সবার আগে দাঁড়িয়েছেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত হয়ে একপর্যায়ে তাঁকে বসে থাকতে দেখা যায়। বেলা একটার সময় মাইকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর তিনি উঠে যান।
তানোর থেকে আহসান হাবিব (৪৫) ভোর পাঁচটায় স্টেশনে এসেছিলেন। তিনিও বেলা একটা পর্যন্ত স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, ছেলের জন্য টিকিট নিতে এসেছেন। ছেলে পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। ঢাকায় তাঁর একটি ফার্মেসি আছে। করোনার কারণে এত দিন ছেলে তানোরে ছিলেন। ট্রেন যাবে শুনেই তিনি ছেলের জন্য টিকিট কিনতে এসেছেন। কিন্তু জানতেন না যে শুধু অনলাইনে টিকিট দেওয়া হবে।
নগরের শালবাগান থেকে এসেছিলেন ঝরনা বেগম (৪০)। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি সন্তানসম্ভবা। এ জন্য তাঁর যাওয়া জরুরি। এত দিন কোনো গাড়িঘোড়া না চলার কারণে যেতে পারেননি। ট্রেন যাওয়ার কথা শুনেই টিকিট কাটতে এসেছিলেন। ঠিক করেছিলেন প্রথম দিনেই তিনি যাবেন। কিন্তু স্টেশনে এসে টিকিট পেলেন না। এখন অনলাইনে টিকিট পাবেন কি না, তা বুঝতে পারছেন না। আসমা খাতুন (৩৫) এসেছিলেন পবা উপজেলার দারুশ এলাকা থেকে। তিনিও টিকিট না পেয়ে ফিরে যান।
অথচ কাউন্টার থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সারিতে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহের জন্য ১০ মে স্টেশনে লাল রং দিয়ে গোল চিহ্ন করে দেওয়া হয়। একইভাবে ট্রেনে ওঠার জন্য ও বসার জায়গাতেও এই চিহ্ন দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
®জানতে চাইলে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবদুল করিম বলেন, সকাল আটটাতেই তিনি বলে দিয়েছেন যেহেতু অর্ধেক আসনে যাত্রী যাবে, সে জন্য কোনো টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে না। অনলাইনে অর্ধেক যাত্রীও না পাওয়া গেলে শেষের দিকে বাকি টিকিট কাউন্টার থেকে দেওয়া হতে পারে। এ জন্য দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কিছু যাত্রী ছিলেন। পরে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোনো টিকিটই কাউন্টার থেকে দেওয়া হবে না। অর্ধেক আসন কীভাবে ফাঁক যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিকিটের নম্বর যদি এক থেকে শুরু হয়, তাহলে সব বিজোড় টিকিট বিক্রি করা হবে। তাহলে কেউ পাশাপাশি বসতে পারবেন না।