গোদাগাড়ীর বাবুডাইং আলোর পাঠশালায় শতভাগ পাস

গোদাগাড়ীর বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার পাস করা শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বিকেলে পাঠশালা প্রাঙ্গণে। ছবি: প্রথম আলো
গোদাগাড়ীর বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার পাস করা শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বিকেলে পাঠশালা প্রাঙ্গণে। ছবি: প্রথম আলো

এবারের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালা থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বরেন্দ্রভূমির গহিনে অবস্থিত এই বিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা সবাই ক্ষুদ্র জাতিসত্তার কোল সম্প্রদায়ের সন্তান।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আলোর পাঠশালায় পাঠ গ্রহণ করে এবার ছয়জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। তাদের মধ্যে দুজন মেয়ে ও চারজন ছেলে। মেয়ে দুজন যথাক্রমে জিপিএ ৩.৩৩ ও ৩.১১ পেয়েছে। চারজন ছেলে যথাক্রমে ২.৭৮, ২.৬৭, ২.৪৪ ও ২.২৮ জিপিএ অর্জন করেছে। এর আগেও এ গ্রাম থেকে একসঙ্গে চারজনসহ আরও শিক্ষার্থী এসএসসি পাস করে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করছে।

বাবুডাইং গ্রামের মোড়ল দেবেন হাসদা বলেন, ‘হামরা জিপিএ-টিপিএ অত বুঝি না। সবাই পাস কইর‌্যাছে, অ্যাতেই হামরা গ্রামবাসী খুশি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী উজ্জামান নূর বলেন, বাবুডাইং গ্রামের কোল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিশুরা আজ থেকে ১৩ বছর আগেও ‘ইশকুল’ শব্দটার সঙ্গে পরিচিত ছিল না। এখনো অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর চেয়ে মাঠে গরু-ছাগল চরাতে, একটু বড় ছেলেমেয়েদের মাঠে কাজ করতে পাঠাতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কেননা এতে অসহায় পরিবারগুলোতে খাবারের জোগান হবে। প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বছরের বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যালয়ে না এসে কাজ করে পড়ালেখা ও পরিবারের খরচ জোগাত। তবুও আমরা হাল ছাড়িনি। তাদের পেছনে লেগে থেকেছি। যার ফলে আজ সবাই পাস করেছে। এসবই হয়েছে প্রথম আলো ট্রাস্ট পরিচালিত বাবুডাইং আদিবাসী আলোর পাঠশালার জন্য।’

বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২১২ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করেন ১০ জন শিক্ষক। এর মধ্যে একজন অতিথি শিক্ষক রয়েছেন।