ওএমএসের তালিকায় সচ্ছলদের নাম, ওয়ার্ড কাউন্সিলর বরখাস্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া

খোলাবাজারে চাল বিক্রির (ওএমএস) তালিকায় সচ্ছল পরিবারের সদস্য, নিজের আত্মীয়সহ ১৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম ওরফে নেহারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আজ রোববার বিকেলে এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠানো হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ও রাজস্ব) মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্র জানায়, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ওএমএস চালের তালিকায় কাউন্সিলর রফিকুল তাঁর আপন ২ ভাই, ১ ভাইয়ের স্ত্রী, ৪ চাচাতো ভাই, ১ চাচাতো বোন, ১ ভাতিজাসহ ১৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। এই ১৬ জনসহ সচ্ছল ব্যক্তি, প্রবাসী ও সামর্থ্যবান মিলিয়ে মোট ৩৩ জনের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সূত্রটি জানায়, ওয়ার্ডের ওএমএস তালিকায় ভোক্তার কার্ডের ২৯ নম্বরে রয়েছে কাউন্সিলর রফিকুলের ভাই তাহের মিয়া, ১১৯ নম্বরে তাহেরের স্ত্রী মুক্তা বেগম, ৩০ নম্বরে কাউন্সিলরের আরেক ভাই জাহের মিয়া, ৩১, ৩৩, ৫৩ ও ৫৪ নম্বরে কাউন্সিলরের চাচাতো ভাই আশরাফুল আলম, ফজলু মিয়া, আবদুল আহত ও আপেল মাহমুদের নাম। এ ছাড়া ২৭ নম্বরে ভাই ফজলু মিয়ার স্ত্রী আছিয়া বেগম ও ১২২ নম্বরে কাউন্সিলরের ভাতিজি ইকরা আক্তারের নাম রয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ ব্যবসায়ী, আবার অনেকের ছেলে প্রবাসে থাকেন। তারপরও হতদরিদ্র ও ভিক্ষুকদের তালিকার তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া স্থানীয় হেলিম মিয়ার দুই ছেলে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। দরিদ্রদের তালিকায় ৩৩৭ নম্বরে হেলিম মিয়ার নাম রয়েছে। হেনেরা বেগমের তিন ছেলে সৌদিপ্রবাসী এবং আরেক ছেলে বিদ্যুৎ বিভাগে চাকরি করেন। ৩৩৮ নম্বরে হেনেরা বেগমের নাম রয়েছে।

এ বিষয়ে কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিম্নমধ্যবিত্তরা লজ্জায় ত্রাণ নিতে যাবে না, এমন লোকজন নিয়ে তালিকা করার জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। সে হিসেবে আমার গোষ্ঠীর চাচাতো ভাইসহ কয়েকজনের নাম দেওয়া হয়েছে। পরে এটি নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে তালিকা সংশোধন করে নতুন তালিকা জমা দিয়েছিলাম।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ও রাজস্ব) মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, ১০ টাকা কেজি দরে ওএমএস চাল বিতরণের তালিকায় পরিবারের সদস্য, আত্মীয়সহ ১৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন কাউন্সিলর রফিকুল। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। আইন অনুযায়ী তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বহিষ্কারের প্রজ্ঞাপনটি বিকেলে মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়।

এর আগে ওএমএস চালের ভোক্তা তালিকায় ৯১ জন সামর্থ্যবানের নাম থাকায় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক, জেলা চেম্বারের পরিচালক ও এফবিসিআইয়ের সদস্য শাহ আলমের ডিলারশিপ বাতিল করা হয় এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মকবুল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।