বরিশাল থেকে ছাড়ল যাত্রীতে ঠাসা লঞ্চ

স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে লঞ্চে করে বরিশাল থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন যাত্রীরা। আজ রোববার সন্ধ্যায় বরিশাল নগরীর লঞ্চঘাটে। ছবি: প্রথম আলো
স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে লঞ্চে করে বরিশাল থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন যাত্রীরা। আজ রোববার সন্ধ্যায় বরিশাল নগরীর লঞ্চঘাটে। ছবি: প্রথম আলো

সকাল থেকে বরিশাল নৌবন্দরে লঞ্চগুলোর ডেকে সাদা রং দিয়ে বৃত্ত এঁকে সামাজিক দূরত্ব রক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু লঞ্চ ছাড়ার সময় হতেই ভেস্তে গেল সব। বৃত্ত আর সামাজিক দূরত্বকে ‘দূরে’ ঠেলেই গাদাগাদি করে লঞ্চে ওঠেন যাত্রীরা। আজ রোববার সন্ধ্যায় বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া তিনটি লঞ্চের ডেকে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় নৌবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের ভিড়ে চিরচেনা রূপ পেয়েছে বরিশাল নৌবন্দর। পন্টুনে পা ফেলার জায়গা নেই। আর নোঙর করা লঞ্চগুলোতে কে কার আগে উঠে জায়গা নিতে পারে, সে জন্য যাত্রীদের চেষ্টার কমতি ছিল না। লঞ্চে প্রবেশমুখে জীবাণুনাশক রাখা হলেও শারীরিক দূরত্বের বালাই ছিল না কোনো লঞ্চেই।

রোববার বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে তিনটি লঞ্চ। এগুলো হলো সুন্দরবন-১১, সুরভী-৯ ও অ্যাডভেঞ্চার-৯। রাজধানীর উদ্দেশে রাত সাড়ে আটটার মধ্যে যাত্রা করার কথা। তবে যাত্রী ভরে যাওয়ায় তার আগেই ছেড়ে যায় লঞ্চগুলো। এগুলোর মধ্যে শুধু সন্দরবন–১১ লঞ্চের সামনে জীবাণুনাশক টানেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকি দুটি লঞ্চে তা দেখা যায়নি।

বিকেল গড়াতেই লঞ্চগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। প্রতিটি লঞ্চের ধারণক্ষমতার দেড় থেকে দুই গুণ যাত্রী ওঠানো হয়। বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার নিজে মাইকিং করে যাত্রীদের সামাজিক দূরত্ব ও অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চে ওঠার ব্যাপারে মাইকে বারবার সতর্কতা প্রচার করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি কোনো যাত্রী। একপর্যায়ে বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান র‌্যাব সদস্যদের নিয়ে নদীবন্দরে পৌঁছে ডেকের অবস্থা দেখে ডেকের প্রধান ফটক বন্ধের নির্দেশ দেন। এরপর তিনটি লঞ্চেরই প্রধান ফটক বন্ধ করা হয়।

যাত্রীরা জানান, স্বাস্থ্যবিধির কথা জানা থাকলেও তা কেউ মানছে না। আবুল হোসেন নামের বাকেরগঞ্জ উপজেলার এক যাত্রী বলেন, ‘অফিস খুলেছে। এখন যে করেই হোক কাল অফিস ধরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সময় কই!’

বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা সরকার বলেন, তাঁরা যথাসাধ্য যাত্রীদের সাবধান করার চেষ্টা করলেও কেউ কথা শুনছে না। একপর্যায়ে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় নদীবন্দরে পৌঁছান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান। তিনি তিনটি লঞ্চের ডেক শ্রেণির ফটক বন্ধের নির্দেশ দেন। তার আগে যাত্রীতে টইটম্বুর হয়ে পড়ে তিন লঞ্চের ডেক।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান বলেন, নদীবন্দরে নোঙর করা তিনটি লঞ্চের ডেক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাত্রীরা কোনো নিয়ম মানতে চান না। পরে যাত্রীদের চাপ সামলাতে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই লঞ্চগুলো ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।