চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও ইলিশের আকাল

নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হলেও চাঁদপুরের বাজারে ইলিশের তেমন দেখা নেই। ছবি: প্রথম আলো
নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হলেও চাঁদপুরের বাজারে ইলিশের তেমন দেখা নেই। ছবি: প্রথম আলো

ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষের এক মাস পেরিয়ে গেছে। এর পরও চাঁদপুরের বাজারে ইলিশের তেমন দেখা নেই। চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার হাটবাজারগুলোয় তেমন হারে ইলিশ উঠছে না। কিছু ইলিশ উঠলেও সেগুলোর দাম চড়া। 

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইলিশ ও জাটকা রক্ষায় গত মার্চ-এপ্রিল মাসে মেঘনার চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। গত ৩০ এপ্রিল ওই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়।
মতলব উত্তর উপজেলার ছেঙ্গারচর, আমিরাবাদ, গজরা, এনায়েতনগর ও সুজাতপুর এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর, মুন্সীরহাট, বরদিয়া আড়ং, নারায়ণপুরসহ আরও কয়েকটি মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, সেখানে তেমন হারে ইলিশ ওঠেনি। ছোট ও মাঝারি আকারের কিছু ইলিশের দেখা মিললেও সেগুলোর দাম খুব চড়া। ক্রেতারাও তেমন কিনছেন না ইলিশ। অনেকেই দরদাম করে চলে যাচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হইচইও নেই ইলিশের কর্নারগুলোতে।
মতলব উত্তর উপজেলার এনায়েতনগর বাজারের মাছ বিক্রেতা পবিত্র দাস এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর বাজারের বিমল দাস বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও মেঘনায় তেমনভাবে ইলিশ ধরা পড়ছে না। অল্প কিছু ইলিশ জেলেদের জালে আসছে। এ জন্য বাজারে ইলিশের এত আকাল। গত বছর এ সময় বাজারে অনেক ইলিশ উঠলেও এবার ভিন্ন চিত্র। কয়েক দিন ধরে যা কিছু ইলিশ আসছে, সেগুলোর দামও বেশি।
মাছ বিক্রেতারা আরও জানান, এক কেজি ওজনের ইলিশ বাজারে আসছে না বললেই চলে। মাঝেমধ্যে দু-চারটি এলেও সেগুলো কেজিপ্রতি ১২০০-১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০-৯০০ আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি থাকায় ক্রেতারা ইলিশ কিনতে চান না। অধিকাংশ ক্রেতাই দরদাম করে চলে যান। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই হতাশ।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার ঢাকিরগাঁও এলাকার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন ধইরা বাজারে যাইতেছি ইলিশ কিননের জন্য। প্রায়ই গিয়া দেখি, ইলিশ নাই। মাঝেমধ্যে দু-চারটি ইলিশের দেখা মিললেও দাম বেশি থাকায় কিনতে পারতাছি না। ইলিশের মৌসুমে ইলিশের এই অবস্থা ভাবাই যায় না। খুবই হতাশ লাগতাছে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মতলব দক্ষিণ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা আকতার ও মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আর কয়েক দিন পর মেঘনায় পানির চাপ বাড়বে। তখন প্রত্যাশিত হারে ইলিশ ধরা পড়বে। ক্রেতারাও কম দামে ইলিশ কিনতে পারবেন তখন। এখন তেমন হারে ইলিশ ধরা না পড়ায় হতাশ হওয়ার কিছু নেই।