বরিশালে মারা যাওয়া ৩ জন কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন

বরিশাল বিভাগে করোনাভাইরাসের উপসর্গ জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া তিনজনের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে তাঁরা কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত ছিলেন বলে জানা যায়। এই তিনজন ভিন্ন ভিন্ন দিন গত ২৯, ৩০ ও ৩১ মে মারা যান।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মারা যাওয়া তিনজনের দুজন বরিশালের এবং একজন পটুয়াখালী জেলার। ৩১ মে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এক নারী (৩৫)। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার। বরিশালের দুজনের একজন (৬০) ৩০ মে নিজ বাসায় মারা যান। তাঁর বাড়ি বাকেরগঞ্জ উপজেলার। অন্যজন (৪৫) বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ২৯ মে। তাঁর বাড়ি মুলাদী উপজেলায়।

এ নিয়ে আরও তিনজনের নাম যুক্ত হলো মৃত্যুতালিকায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৫৫ জন।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মারা যাওয়া তিনজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৪-তে। এর মধ্যে বরিশালের তিনজন, পটুয়াখালীর চারজন, বরগুনা, ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের দুজন করে এবং ভোলার একজন রয়েছেন।

এ ছাড়া বিভাগে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬২-তে। তাঁদের মধ্যে ৩১৬ জনই বরিশাল নগরের, যা বিভাগের ছয় জেলায় শনাক্ত মোট রোগীর ৪৭ দশমিক ৭৩ ভাগ।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার নতুন শনাক্ত ৫৫ জনের মধ্যে ৪৫ জনই বরিশাল জেলার। এই ৪৫ জনের মধ্যে আবার ৪৪ জনই বরিশাল নগরের। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন পুলিশ সদস্য, ৭ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী, দুজন ব্যাংক কর্মকর্তা রয়েছেন। এ ছাড়া নতুন শনাক্তের মধ্যে পটুয়াখালীর পাঁচজন, ভোলার তিনজন এবং বরগুনা জেলার দুজন রয়েছেন।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, বরিশাল নগরে সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়টি খুব উদ্বেগের। বিশেষ করে চার দিন ধরে নগরে ৩৫ থেকে ৪৪ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। এটি একটি ভীতিকর ইঙ্গিত। এর পেছনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সাধারণ মানুষের উদাসীনতাই মূল কারণ।

শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ঈদের সময় বিপুলসংখ্যক লোকের বিভিন্ন স্থান থেকে বাড়ি ফেরার কারণেও আশঙ্কাজনক হারে সংক্রমণ বাড়ছে। এমন অবস্থায় পুরো বিভাগের সংক্রমণের উৎসে পরিণত হয়েছে বরিশাল শহর।