নিখরচায় চাষির আম পরিবহনে যুক্ত হলো ডাক বিভাগ

কোনো খরচ ছাড়াই রাজশাহীর চাষিদের আম পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডাক বিভাগ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীর পুঠিয়া থেকে ডাক বিভাগের একটি কাভার্ড ভ্যান তিনজন চাষির পাঁচ টন আম নিয়ে ঢাকায় রওনা দেয়।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সেবার উদ্বোধন করেন। ডাক বিভাগ জানিয়েছে, বুধবার (৩ জুন) চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আরেকটি কাভার্ড ভ্যান ঢাকায় আম নিয়ে যাবে। তারপর যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে কাভার্ড ভ্যানের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হবে। মূলত রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষিদের সুবিধা দিতেই এভাবে নিখরচায় আম পরিবহনের এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারির এই দুর্যোগকালে ডাক বিভাগের ‘কৃষকবন্ধু ডাক সেবা’র আওতায় এ কার্যক্রম শুরু হলো। ডাক বিভাগ বলছে, শুধু রাজশাহীর আম নয়, এ কর্মসূচির আওতায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৌসুমি ফল ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। এ জন্য চাষিকে কোনো খরচ দিতে হবে না। তবে কোনো ব্যবসায়ী বা মধ্যস্বত্বভোগী ডাক বিভাগের মাধ্যমে ফল পরিবহন করতে পারবেন না। সুবিধা নিতে হলে তাঁকে চাষিই হতে হবে।

মঙ্গলবার সকালে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ভিডিও কনফারেন্সে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে যুক্ত হন। এ সময় তিনি ঢাকায় আম নিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ঢাকা থেকে যুক্ত হয়েছিলেন তাঁর মন্ত্রণালয়ের সচিব নূর-উর-রহমান। পুঠিয়ায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামসুল হক, রাজশাহী ডাক বিভাগের পরিচালক রশিদ কুমার শীল, উত্তরাঞ্চলের পোস্টমাস্টার জেনারেল শফিকুল আলম, ইউএনও মো. ওলিউজ্জামানসহ কৃষি ও ডাক বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আমচাষিরা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন।

বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল মোহাম্মদ ওয়াহিদ উজ-জামান জানান, ডাক বিভাগের মাধ্যমে এভাবে ঢাকায় আম পাঠাতে হলে প্রান্তিক চাষিরা নিজ নিজ এলাকার কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। কৃষি কর্মকর্তা তালিকা করে জেলা প্রশাসককে দেবেন। জেলা প্রশাসক তালিকা চূড়ান্ত করে দেবেন। তারপর এই পদ্ধতিতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ক্ষুদ্র চাষির আম ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, দুর্যোগকালীন প্রান্তিক চাষিদের সুবিধা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে। সে অনুযায়ী বিনা খরচে মৌসুমি ফল নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। মাঠপর্যায়ে তারা এটি বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এর মাধ্যমে প্রকৃত চাষিরা উপকৃত হবেন। তাঁরা ঢাকায় ক্রেতা ঠিক করে বিনা খরচে আম নিয়ে যাবেন।

করোনাকালে আম বাজারজাত নিয়ে যেন সমস্যা না হয়, সে জন্য এবারই প্রথম শুধু আমের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ট্রেন চলবে। ট্রেনে দেড় টাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এবং এক টাকা ৩০ পয়সা কেজি ভাড়ায় রাজশাহী থেকে আম ঢাকায় নেওয়া যাবে। ঢাকায় গিয়ে ব্যবসায়ীদের সুবিধামতো স্টেশনে আম নামানো হবে।