নারী-বয়স্ক কর্মকর্তাদের আসতে বারণ করা হবে: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

স্বল্পসংখ্যক কর্মকর্তা নিয়ে প্রশাসনের কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পারতপক্ষে যাঁদের সচিবালয়ে আসার অত্যন্ত প্রয়োজন রয়েছে বা যাঁদের ছাড়া একদমই কাজ চলবে না তাঁদের নিয়েই স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনার সময়ে অফিস করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নারী ও বয়স্ক কর্মকর্তাদের অফিসে আসতে বারণ করা হবে।

আজ জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন প্রতিমন্ত্রী প্রথম আলোকে এ কথা বলেছেন। লকডাউন পরিস্থিতি শিথিল করা হবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটা অভ্যাসের মধ্যে নিতে হবে। কেননা করোনা সংক্রমণের ফলে যে মহামারি চলছে, তা শিগগিরই কেটে যাচ্ছে না। তাই লকডাউন কোনো সমাধান নয়। বরং আমাদের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমর্কতাদের নিয়ে প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করতে হবে। সবাইকে একবারে আমরা অফিসে আসতে বলব না। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির কমর্চারী, যাঁরা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় থাকেন, গাড়ির চালক, এমএলএসএসসহ যাঁদের প্রয়োজন নেই তাঁদের অফিসে আসতে নিরুৎসাহিত করছি। আমরা বাকি কমর্কতা-কমর্চারীদের রিজার্ভে রাখতে চাইছি।’ তিনি বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও উচিত পর্যায়ক্রমে ছুটি দিয়ে কম কর্মী দিয়ে কাজ পরিচালনা করা।

মানুষের দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এক গবেষণায় দেখা গেছে মানুষের আয় ৭৪ শতাংশ কমে গেছে। জেনেভায় মানুষকে খাদ্য পেতে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। ইংল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তাই আমরা সচেতনতা বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছি। অসুস্থ বা কোনো ধরনের অসুবিধায় আছেন এমন কাউকে অফিসে আসতে বলছি না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও উচিত তাদের কর্মীদের স্বাস্থ্যগত বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া। তাদের পর্যায়ক্রমে ছুটি দিয়ে অল্পসংখ্যক কর্মীদের নিয়ে কাজ পরিচালনা করা। কর্মকর্তাদের ঘরে বসে কাজ করার ব্যাপার আমরা বেশি উৎসাহিত করছি। আমরা এসব বিষয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের পরামর্শ দিয়েছি। আশা করি, তাঁরা তাঁদের মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে এসব নির্দেশ পালন করবেন।’

সচিবালয়ে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না জানালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজ এ অবস্থার অনেকখানি উন্নতি হয়েছে। ধীরে ধীরে সবাই মানবে। আমরা লিফট ব্যবহার করতে মানা করেছি। লিফটগুলোতে সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা মানতে হবে। যদি ব্যবহার করতেই হয় তবে দুই বা তিনজনের বেশি নয়। কর্মকর্তাদের আমরা বলবে একসঙ্গে বসে যেন গল্পগুজব না করে।’ হ্যান্ড থার্মাল স্ক্যানারে প্রবেশকারীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে না জানালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ সপ্তাহের মধ্যেই এসব বিষয় ঠিক হয়ে যাবে। এ ছাড়া নিরাপত্তাকর্মীরা অবশ্যই দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে মাস্ক পরিধান করে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন। অফিসের যানবাহনেও নিয়ম মানতে হবে। যে কেউই নিয়ম না মানলে জরিমানা করা ছাড়াও কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজও দেখা গেছে, সচিবালয়ের ভেতরে সংক্রমণ ঠেকাতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নিজ উদ্যোগে মাস্ক পরা ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থাই তেমন জোরালো নয়।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার রোধে ৬৬ দিন ছুটি থাকার পর ৩১ মে সচিবালয়সহ সব অফিস খুলেছে। জরুরি কাজের জন্য কয়েকটি মন্ত্রণালয় আগেই খোলা ছিল। গত রোববার খুলেছে সব কটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। তবে সচিবালয়ে সাধারণ দর্শনার্থী প্রবেশে আজও কড়াকড়ি রয়েছে।