করোনার উপসর্গ নিয়ে তরুণের মৃত্যু

নরসিংদীর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক তরুণ মারা গেছেন। আজ বুধবার সকাল নয়টার দিকে হাসপাতালটির আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এন এম মিজানুর রহমান।

এ নিয়ে নরসিংদী সদর উপজেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন অন্তত ১২ জন। তাঁদের মধ্যে অন্তত তিনজনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসে। অন্যদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন জেলার তালিকাভুক্ত সাত ব্যক্তি।

আজ মারা যাওয়া তরুণ ভেলানগর বাসস্ট্যান্ডে পরিবহনের ব্যবসা করতেন এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা জানান, এক সপ্তাহ ধরে তিনি জ্বর ও ঠান্ডায় ভুগছিলেন। এ ছাড়া তাঁর উচ্চ রক্তচাপও ছিল। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ সকাল নয়টার দিকে তিনি মারা যান। তবে তিনি করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা পরীক্ষার জন্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।

এ এন এম মিজানুর রহমান জানান, ‘গতকাল বিকেলে ওই তরুণ জ্বর, ঠান্ডা, শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়। রাতে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়নি। পরে আজ সকালে তিনি মারা যান। এরই মধ্যে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নরসিংদীতে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালটিকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতাল হিসেবে সুনির্দিষ্ট করার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৮৪ জন এখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সাতজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাজধানী ঢাকায় রেফার করা হয়। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২৭ জন।

সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুইক রেসপন্স টিমের আহ্বায়ক মো. শাহ আলম মিয়া জানান, ‘করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর খবর জানতে পেরে আমাদের টিম ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল থেকে মরদেহ গ্রহণ করে। দুপুরে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বল্পসংখ্যক লোকজনের অংশগ্রহণে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।’

জেলা করোনা প্রতিরোধ জরুরি সেলের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল পর্যন্ত জেলার ছয় উপজেলা থেকে মোট ৪ হাজার ৩৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ৩ হাজার ৪১২ জনের নমুনা। তাঁদের মধ্যে ৬১৪ জনকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়।

জেলাজুড়ে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৪৩১ জন, রায়পুরায় ৪১ জন, পলাশে ৪৩ জন, শিবপুরে ৪২ জন, বেলাবতে ৪১ জন ও মনোহরদীতে ১৬ জন রয়েছেন। এ ছাড়া আক্রান্ত ২৮ জন হাসপাতালে আইসোলেশনে আছেন এবং ৩৬৭ জন আছেন হোম কোয়ারেন্টিনে। অন্যদিকে আক্রান্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২১২ জন।