বগুড়ায় দুই সপ্তাহের ব্যবধানে করোনার সংক্রমণ তিন গুণ

বগুড়ায় গত দুই সপ্তাহে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত মানুষ শনাক্তের সংখ্যা তিন গুণের বেশি হয়েছে। ৪ এপ্রিল থেকে ২০ মে পর্যন্ত জেলায় ১১২ জন কোভিড–১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছিলেন। আজ বুধবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭৫। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৬৩ জন বেড়েছে, যা মোট শনাক্তের ৭৬ শতাংশ।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে আইসোলেশনে থেকে করোনাভাইরাস মুক্ত হয়েছেন ৩৫ জন। সুস্থতার হার মোট আক্রান্তের ৭ শতাংশ। করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১০ জন।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এবং বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে আরও ৩৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়ার আছেন ২৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত ব্যক্তির মধ্যে একজন চিকিৎসক রয়েছেন।

বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বুধবার রাতে প্রথম আলোকে জানান, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ল্যাবরেটরিতে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে বগুড়ার ১৫৩টি নমুনার মধ্যে ১৫ জনের করোনা পজিটিভ আসে। আর জয়পুরহাটে ১৫টি নমুনার মধ্যে ৬ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। বাকি নমুনা নওগাঁ ও দিনাজপুর জেলার। এই দুই জেলায় দুজনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। অন্যদিকে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজে ২৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে বগুড়ার ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

সরকারি-বেসরকারি দুই মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরিতে বগুড়ায় নতুন করে শনাক্ত ২৬ জনের মধ্যে বগুড়া শহরের ১৪ জন, দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ৪, শেরপুর উপজেলার ২, গাবতলী উপজেলায় ২, শাজাহানপুর উপজেলায় ২ এবং সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার একজন করে আছেন। শহরের ১৪ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ জলেশ্বরীতলা, মালগ্রাম ও ঠেঙ্গামারা এলাকার বাসিন্দা রয়েছেন।

ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত জেলায় ৭ হাজার ৬৭৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৭১৭টি নমুনার ফল পাওয়া গেছে। করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৪৭৫ জন। এর মধ্যে ৪৫ জন পুলিশ, ১৫ জন কারারক্ষী এবং ২৭ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী আছেন। শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের সিংহভাগই আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হয়েছেন। বাকিরা ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বগুড়ায় ফেরা। আক্রান্তদের মধ্যে ৩৬৫ জন পুরুষ, ৮৯ জন নারী এবং ২১ জন শিশু রয়েছে। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সর্বোচ্চ ৩৭৬ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মধ্যে বগুড়া শহরে সর্বোচ্চ ২৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অন্য উপজেলার মধ্যে শাজাহানপুরে ৩৩ জন, গাবতলীতে ৩২ জন, কাহালুতে ১৬ জন, শেরপুরে ৩০ জন, শিবগঞ্জে ৯ জন, আদমদীঘিতে ১২ জন, সারিয়াকান্দিতে ২৩ জন, সোনাতলায় ১১ জন, দুপচাঁচিয়ায় ১৩ জন, ধুনটে ১২ জন এবং নন্দীগ্রাম উপজেলায় ৮ জন আছেন।

জেলায় প্রথম কোভিড–১৯ রোগী শনাক্ত হন ৪ এপ্রিল। ঈদের আগে ২০ মে পর্যন্ত ৫৬ দিনে শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১১২ জন। শেষ ১৫ দিনে শনাক্ত হয়েছেন ৩৬৩ জন।