করোনা সচেতনতায় পুলিশের ব্যতিক্রমী একটি উদ্যোগ

বাসায় কটি মাস্ক রাখতে হবে। কী কারণে মাস্ক সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পিপিই পরে কী কী করা যাবে না। সারা দিনে বারবার কমপক্ষে ৪০ সেকেন্ড ধরে কী করতে হবে। করোনাভাইরাস কীভাবে দেহে প্রবেশ করে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আসামি গ্রেপ্তারের সময় কী পোশাক পরিধান করতে হবে। এমন ২২টি জিজ্ঞাসা–সংবলিত একটি প্রশ্নপত্র। পুলিশের সব সদস্য হাতে পায় এই প্রশ্নপত্র। সবাইকে এর উত্তর লিখে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হয়েছে।

এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ প্রশাসনের একটি উদ্যোগ। মূলত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতেই এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুলিশ সুপার কার্যালয়, ৯ থানা ও সব ইউনিটে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের এই প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে উত্তর দিতে হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) আলগমীর হাসেন এ উদ্যোগ নেন। জেলার প্রায় ১ হাজার ৬০০ পুলিশ সদস্য এই সচেতনতামূলক পরীক্ষায় অংশ নেন।

নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষার নাম শুনে অবাক হয়েছিলাম। প্রশ্নপত্র দেখে আরও অবাক হয়েছি। তবে প্রশ্নগুলো মোটেও সহজ ছিল না। এই প্রশ্নপত্র তৈরি করতে অনেক মেধা ও খাটুনি দিতে হয়েছে। তবে এটি অনেক কার্যকরী একটি পরীক্ষা। নিশ্চিত করে বলতে পারব, যদি কেউ এই প্রশ্নগুলো দৈনন্দিন জীবনে মেনে চলেন, তাহলে কোনো পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হবেন না।’

একই মন্তব্য করেন আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আলমগীর হোসেন বলেন, পুলিশ সদস্যরা রাস্তাঘাট ও মাঠে কাজ করছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে যেতে হয়। তাই তাঁদের মধ্যে আরও বেশি করে সচেতনতা তৈরি করতেই এই প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষার নেওয়ার উদ্যোগ মাথায় আসে। তিনি বলেন, ‘প্রশ্নগুলো করোনাকালের দৈনন্দিন জীবন থেকে বাছাই করে নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নের উত্তরগুলো মাথায় রেখে কাজ করলে সবাই করোনার সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস। প্রশ্নের উত্তরগুলো প্রত্যেক ইউনিট প্রধানের কাছে পাঠানো হয়েছে।’

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, ‘সবার আগে নিজের নিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে। প্রায়ই সন্ধ্যা আটটার দিকে পুরোর জেলার প্রায় ১ হাজার ৬০০ থেকে ৭০০ পুলিশ সদস্যকে ওয়ারলেসের মাধ্যমে করোনা বিষয়ে সচেতনতামূলক নির্দেশনা দিয়ে থাকি। অনুরূপভাবে ২২টি প্রশ্ন সচেতনতা তৈরি করতে অনেক সহযোগিতা করবে বলে আমার বিশ্বাস।’