করোনায় কাছের মানুষ দূরে রেখে সব মানুষের পাশে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

প্রায় দেড় মাস ধরে সীমা খাতুন (২৯) একমাত্র সন্তানকে দূর থেকে দেখছেন। না পারছেন কাছে যেতে, না আদর করতে। না, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন। স্বেচ্ছায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন। বিনিময়ে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। তারপরও মহামারির সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেই খুশি তিনি।

বর্তমান করোনার দুর্যোগে রাজশাহী মহানগর এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সীমা একা নন, ১১ জন মিলে এ কাজ করছেন। ঈদের দিনটি ছাড়া গত দেড় মাসে এক দিনও থামেননি। গত শনিবার পর্যন্ত তাঁরা ৩৫৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে নয়জনের। তাঁদের এ কাজে সহায়তার জন্য সিটি করপোরেশন একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছে। আর সহায়ক অন্যান্য উপকরণ দিচ্ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ।

এই স্বেচ্ছাসেবীরা জাতীয় তরুণ সংঘের রাজশাহী জেলা শাখার সদস্য। করোনার নমুনা সংগ্রহে এই সংঘের ১২ সদস্যকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গত ২০ এপ্রিল থেকে তাঁদের মধ্যে ১১ জন নগরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করছেন। অন্য সদস্যরা হলেন সংগঠনের রাজশাহী জেলা শাখা সভাপতি ও সমন্বয়কারী ওয়াদুল-উল-মো. তাকাদ্দাস এবং রুবিনা পারভীন, সুলতান আহমেদ, এ কে এম শফিকুল হক, আহমেদুল হক, নাজুমল হক, মোহাম্মদ নাসির, সোহাগ আলী, ক্লারা বিনতে মনতা ও ইউসুফ আলী।

সীমা একজন পল্লিচিকিৎসক। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তাঁর সংসার। এ কাজে জড়িত হওয়ার পর থেকে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় ছেলেটিকে ওর নানির বাসায় রেখে এসেছেন। প্রতিদিন কাজ শেষে বাসায় ফিরে ছেলেকে না দেখলে শান্তি পান না। তাই মায়ের বাসায় যান। ফোন করলে ছেলে এসে বারান্দায় দাঁড়ায়। দূর থেকে ছেলেকে দেখে চলে আসেন। তিনি বলেন, ছেলেকে ছেড়ে থাকতে অনেক কষ্ট হয়। তারপরও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার কারণে সব ভুলে থাকেন।