করোনা পজিটিভ রোগী গেছেন চাকরিতে

রাজশাহীর বাগমারায় কোভিডে আক্রান্ত দম্পতির বাড়ি লকডাউন করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে উপজেলা প্রশাসন। করোনা পজিটিভ স্বামী দুদিন আগে কর্মস্থলে ফিরে গেছেন গাজীপুরে। তবে তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা শিশুসন্তান ও দাদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই বাড়িসহ আশপাশের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের এই দম্পতি গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ঈদের আগে তাঁরা বাড়িতে আসেন। এরপর তাঁদের করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে ৩০ মে তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রাজশাহীর ল্যাবে পাঠানো হয়। নমুনা পরীক্ষায় দুজনেরই শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার রাতে এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়া যায়। রাজশাহীর সিভিল সার্জন এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইউএনওর নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি দলের সদস্যরা কোভিডে আক্রান্ত দম্পতির বাড়ি লকডাউন করতে এবং করোনা পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি জানাতে তাঁদের বাড়িতে যান। তাঁরা গিয়ে দেখেন, করোনা সংক্রমিত স্বামী (৩০) গত মঙ্গলবার বাড়ি ছেড়ে চাকরিতে চলে গেছেন। তবে বাড়িতে তাঁর স্ত্রীকে (২৫) পাওয়া গেছে। এরপর স্ত্রী ছাড়াও তাঁদের সংস্পর্শে আসা ১০ বছরের শিশুসন্তান ও দাদিকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়।

ইউপি চেয়ারম্যান বিজন কুমার সরকার জানান, এই দম্পতির করোনা উপসর্গের বিষয়টি জানার পর তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। তাঁদের কয়েক দিনের খাবারও কিনে দেওয়া হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার ওই যুবক তাঁর স্ত্রী, সন্তান রেখে চাকরিতে চলে যান।

আজ কয়েক দফায় ওই যুবকের মুঠোফোনে কল করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বুধবার রাতে তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, বাড়িতে আসার পর থেকে তাঁদের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বর্তমানেও শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, নমুনা নেওয়ার পর একজন স্বাস্থ্যকর্মী বলেছিলেন, তাঁদের অবস্থা ভালো। এ জন্য তিনি চলে এসেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, একজন স্বাস্থ্যকর্মীর রোগীদের কাছে ভুল বার্তা দেওয়া এবং এরপর তাঁদের বাইরে ঘুরে বেড়ানো ও কর্মস্থলে চলে যাওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই।

বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ বলেন, ওই যুবক যে পোশাক কারখানায় চাকরি করেন, সেখানে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

এ নিয়ে বাগমারায় সাতজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হলো। তাঁদের মধ্যে চারজন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন।