নেত্রকোনায় কোভিড-আক্রান্তদের ৪০ শতাংশ সুস্থ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনায় কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৪০ শতাংশ সুস্থ হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে সুস্থতার হার কিছুটা বাড়ছে। এর মধ্যে গত বুধবার সুস্থতার হার ছিল সবচেয়ে বেশি। জেলায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ১৮ শতাংশ।

নেত্রকোনা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জেলায় প্রথম কোভিডে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হন গত ১০ এপ্রিল। তিনি ছিলেন খালিয়াজুরী হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স (২৮)। অপরজন সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের পোশাককর্মী (৪৮)। এর ৩৬ দিনের ব্যবধানে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৮। এর সপ্তাহখানেক পর ২৩ মে আক্রান্তের সংখ্যা হয় ২০৩।
গত বুধবার রাত পর্যন্ত জেলায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৫৫ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১০২ জন। আক্রান্ত লোকজনের মধ্যে প্রথম সুস্থ হয়ে ওঠেন ৩০ এপ্রিল একজন, তিনি প্রথম আক্রান্ত হওয়া পোশাককর্মী। এর ৪ দিন পর আরও ১০ জন সুস্থ হন। প্রথম পর্যায়ে সুস্থতার হার কম হলেও গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই সংখ্যা বাড়ছে। আগে সুস্থতার হার ছিল ৩২ দশমিক ৬২ শতাংশ।
গত বুধবার পর্যন্ত সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশ। জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন তিনজন। সে হিসাবে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ১৮ শতাংশ। মারা যাওয়া লোকজনের বয়স ৫৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে একজন নারী রয়েছেন। অবশ্য ওই তিনজনের মৃত্যুর পর তাঁদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। প্রথম মারা যান গত ৮ মে মোহনগঞ্জের এক ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী।

এদিকে আক্রান্ত ও সুস্থ হয়ে ওঠা বেশ কয়েকজন রোগী ও তাঁদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংক্রমিত লোকজনের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া সবাই বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিরা হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি আছেন। হালকা জ্বর ও কাশি রয়েছে তাঁদের। অনেকের আবার তাও নেই। সুস্থ হওয়া লোকজনের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সুস্থ হওয়া লোকজনের মধ্যে কথা হয় কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-ইমরান রুহুল ইসলাম, ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান, পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ধ্রুব সাহা রায়ের সঙ্গে। তাঁরা প্রথম আলোকে জানান, নিজ কর্মস্থলে কোয়ার্টারের আলাদা কক্ষে থেকে তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া, ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স ও প্রোটিন জাতীয় খাবার খেয়েছেন। গরম পানি, লং-আদা দিয়ে চা পান করেছেন, গরম পানির ভাপ নিয়েছেন। উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করেছেন। করোনাভাইরাস নিয়ে কোনো ধরনের ভয় বা গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তারা। বরং মনোবল দৃঢ় রেখে নিয়ম মেনে চললে সহজেই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হওয়া যায় বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।
নেত্রকোনার সিভিল সার্জন মো. তাজুল ইসলাম জানান, জেলায় গত ২ এপ্রিল থেকে গত বুধবার পর্যন্ত পরীক্ষাগারে পাঠানো নমুনার সংখ্যা ৩ হাজার ৯৮১। এর মধ্যে ৩ হাজার ৬৭৮টির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এতে ২৫৫ জনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৩ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১০২ জন।