মদে ভেজাল, আবর্জনা ফেলে প্রতিবাদ

মদে পানি মিশিয়ে বিক্রি করার অভিযোগে দোকানের সামনে আবর্জনা ফেলে প্রতিবাদ। নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজারের নন্দকুঁজা নদীর তীরে। ছবি: প্রথম আলো
মদে পানি মিশিয়ে বিক্রি করার অভিযোগে দোকানের সামনে আবর্জনা ফেলে প্রতিবাদ। নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় বাজারের নন্দকুঁজা নদীর তীরে। ছবি: প্রথম আলো

উৎসব, বিয়ে, শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে মদ পান করে থাকেন নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মদে পানি মিশিয়ে দোকানি নিরঞ্জন ঘোষ বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিনের ক্ষোভ মেটাতে তাঁর দোকানের সামনে আবর্জনা ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। আজ শুক্রবার সকালে পৌরশহরের চাঁচকৈড় বাজারের নন্দকুঁজা নদীর তীরে ঘটনাটি ঘটেছে।

পরিচ্ছন্নতাকর্মী রাজকুমার, স্বদেশ, গোপাল ও সুমন অভিযোগ করেন, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তাঁরা ২০-৩০টি পরিবার এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। নিজেদের অবস্থান ও পেশাগত কারণে নিয়মিত মদ পান করে থাকেন তাঁরা। বিশেষ করে বিবাহ, নানা উৎসব ও শেষকৃতের অনুষ্ঠানে মদের চাহিদা বেশি থাকে তাঁদের। শুরুতে মদের গুণগত মান অনেকটা ঠিক থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে মদে বেশি পরিমাণ পানি মিশিয়ে তাঁদের পরিবেশন করে আসছিলেন দোকানি নিরঞ্জন ঘোষ।

রাজকুমার, স্বদেশ, গোপাল ও সুমন বলেন, এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে দোকানির কাছে অভিযোগ দিয়েও কাজ হয়নি। উপরন্তু তাঁদের কাছে মদ বিক্রি করবেন না বলে হুমকি দিতে থাকেন দোকানি। ভেজাল মদ বিক্রি এবং দোকানির আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে আবর্জনা ফেলে প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। পরে ভেজালমুক্ত মদ বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় দোকানির অনুরোধে দোকানের সামনে থেকে আবর্জনা অপসারণ করেন তাঁরা।

তবে ভেজাল মদ বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে দোকানি নিরঞ্জন ঘোষ দাবি করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে বিচ্ছিন্ন ঘটনাটি ঘটেছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে। জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মেদপুর এলাকার নিয়ামত আলীর অনুমোদন নেওয়া দোকান থেকে ১৫ বছর ধরে মদ বিক্রি করছেন তিনি। মদ সেবনকারী ২০০ জনের কাছে মাসে সাড়ে ৯ লিটার করে মদ বিক্রি করেন। ৫০০ মিলিলিটারের প্রতিটি বোতল ১৫০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি।

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অনেক অপেশাদার ব্যক্তির কাছে যথেচ্ছভাবে মদ বিক্রি করেন নিরঞ্জন ঘোষ। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে অনেক অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনের নজরদারির অভাবে অনেকটা উন্মুক্তভাবে চলছে মদের বেচাবিক্রি।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।