করোনা রোগীর দরজায় খাবারের ঝুড়ি নিয়ে ডিসি

প্রতি ঝুড়িতে ৩০টি আইটেমের ১৪ দিনের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা সামগ্রীর অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ
প্রতি ঝুড়িতে ৩০টি আইটেমের ১৪ দিনের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা সামগ্রীর অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ

 বড় একটা ঝুড়ি। তার ভেতর চাল, ডাল, তেল, মসলাপাতিসহ বিভিন্ন ধরনের ফল। দুজন কর্মচারী ঝুড়িটি একটি বাড়ির প্রধান ফটকের সামনে রাখলেন। সেখানে দাঁড়িয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা মোবাইলে কল দিয়ে বাড়ির এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে ফটকের সামনে আসতে বলেন।

 এ সময় জেলা প্রশাসক ওই ব্যক্তির কাছে ঝুড়িটি বুঝিয়ে দিয়ে জানান, এর ভেতর ১৪ দিনের খাদ্যসামগ্রী রয়েছে। এই বাড়ির যিনি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন, এগুলো তাঁর জন্য। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা সামগ্রী এটা।

 আজ শুক্রবার ছুটির দিনে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন এভাবে কুষ্টিয়া শহরেরর কয়েকটি এলাকায় করোনা পজিটিভ রোগীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন।

 জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলায় গতকাল বিকেল পর্যন্ত ১০৫ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা সামগ্রীর অংশ হিসেবে জেলার করোনা রোগীদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার এ উদ্যোগ। আজ শুক্রবার বিকেলে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়।

 বিকেল চারটায় জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, এনডিসি মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম খাদ্যসামগ্রী নিয়ে বের হন।

 প্রথমেই শহরের পেয়ারাতলা এলাকায় এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে যান। সেখানে ওই আক্রান্ত ব্যক্তির ছেলের সঙ্গে কথা বলেন জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। পজিটিভ রোগীর খোঁজখবর নিয়ে ছেলের হাতে খাদ্যসামগ্রীর ঝুড়ি বুঝিয়ে দেন। একইভাবে শহরের কুঠিপাড়া ও জুগিয়া এলাকায় গিয়ে রোগীদের খোঁজখবর নিয়ে তাঁদের বাড়িতেও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন।

 এনডিসি মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, পর্যায়ক্রমে আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে প্রত্যেক আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এই সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

 প্রতি ঝুড়িতে ৩০টি আইটেমের মধ্যে মিনিকেট চাল ২৫ কেজি, ডিম ৩০টি, দুধ ২ লিটার, মাল্টা ২ কেজি, আপেল ২ কেজি, লিচু ৮০টি, ছোলা ১ কেজি, লেবু ২০টি, গাজর ৫০০ গ্রাম, আমলকি ৫০০ গ্রাম, কাজুবাদাম ২০০ গ্রাম, আলু ৫ কেজি, সয়াবিন তেল ২ লিটার, লবণ ২ কেজি, চিনি ২ কেজি, সুজি ১ কেজি, মসুর ডাল ২ কেজি, সাবান ২টি, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ২টি, আদা ৫০০ গ্রাম, কালোজিরা ২৫০ গ্রাম, লবঙ্গ ২৫ গ্রাম, তেজপাতা ১০০ গ্রাম, দারুচিনি ১০০ গ্রাম, ম্যাগি স্যুপ ৫টি, নুডলস ৮ প্যাকেট, খেজুর ১ কেজি, অ্যান্টিহিস্টাসিন ৫ পাতা, সিভিট ৫ পাতা, প্যারাসিটামল ৫ পাতা রয়েছে।

 জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, আক্রান্ত রোগীদের ১৪ দিন ঘরে বন্দী থাকতে হচ্ছে। তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও বাড়ির বাইরে বের হতে পারছেন না। তাই তাঁদের প্রত্যেকের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ১৪ দিনের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এতে তাঁদের মনোবল শক্ত হবে।