করোনা নেগেটিভ, সেই বাংলাদেশি যুবকের লাশ হস্তান্তর

ভারতের আসামে ‘গরুচোর’ সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক রনজিত রিকমনের (৩৫) লাশ অবশেষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সিলেটের সুতারকান্দি সীমান্তে তাঁর লাশ হস্তান্তর করা হয়। কোভিড-১৯–এর পরীক্ষার ফলাফলে নিহত রনজিতের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মেলেনি।

রনজিতের বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের ধামাই চা-বাগানের তাঁতীপাড়া এলাকায়। তিনি ওই বাগানের শ্রমিক ছিলেন। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএসএফ রনজিতের লাশ হস্তান্তর করতে চাইলে কোভিড-১৯–এর ফলাফল না থাকায় বিজিবি তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তারা লাশ নিয়ে ফিরে যায়।

বিজিবির সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেলে লাশ হস্তান্তরের সময় বিজিবি-বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষে ৫২ ব্যাটালিয়নের বড়গ্রাম ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার মো. আলী আজগর এবং বিএসএফের পক্ষে সুতারকান্দি ক্যাম্পের কমান্ডার বিষ্ণু কুমার নেতৃত্ব দেন। পরে নিহত রনজিতের লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন, মামলার এজাহারের কপি ও কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর করা হয়। এরপর লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ সময় সেখানে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ, চিকিৎসক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নিহত রনজিতের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

সিলেটের বিয়ানীবাজারে অবস্থিত বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রনজিতের স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। স্বজনেরা লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

বিজিবি জানায়, ১ জুন ভারতের আসাম রাজ্যের পাথারকান্দি থানার পুতনিছড়া চা-বাগান এলাকায় গরুচোর সন্দেহে স্থানীয় লোকজন কয়েকজনকে পিটুনি দেন। এতে রনজিত ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত হন আরও চারজন। এর মধ্যে একজন হলেন জুড়ীর গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের কুচাই ফাঁড়ি চা-বাগানের বাসিন্দা মুলেম মুন্ডা (৩৬)। বাকি দুজন ভারতীয় নাগরিক। পরে পুলিশ হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে পাথারকান্দি থানায় মামলাও হয়। আহত মুলেম আসামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুজনই ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেন।