নেত্রকোনায় ব্যাংকের ২৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী কোভিডে আক্রান্ত

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

নেত্রকোনায় বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়েছেন। রোববার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন ব্যাংকের অন্তত ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ১০ এপ্রিল জেলায় প্রথম দুজনের শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। একজন খালিয়াজুরি ও অপরজন সদর উপজেলায়। রোববার পর্যন্ত প্রায় দুই মাসে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ২৯৪-এ। এর মধ্যে ২৫ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।

আক্রান্ত ব্যক্তিরা ৬টি উপজেলায় বিভিন্ন ব্যাংকের ১১টি শাখা কার্যালয়ে কর্মরত। তাঁদের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের নেত্রকোনা শাখায় একজন, কেন্দুয়ায় শাখায় পাঁচজন, সোনালী ব্যাংকের কেন্দুয়া শাখায় পাঁচজন, মদন শাখায় তিনজন, পূর্বধলা শাখায় দুজন, আটপাড়া শাখায় একজন, রূপালী ব্যাংকের কেন্দুয়া শাখায় একজন, কৃষি ব্যাংকের কেন্দুয়া শাখায় তিনজন, সাহিতপুর শাখায় দুজন, দুর্গাপুর শাখায় একজন ও জনতা ব্যাংকের পূর্বধলা শাখায় একজন। ব্যাংক কর্মকর্তাদের সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি কেন্দুয়ায়। ওই উপজেলায় বিভিন্ন ব্যাংকের ১৫ কর্মকর্তা আক্রান্ত। উপজেলাটিতে মোট আক্রান্ত ৮৫ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাসাবাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন।

সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদ নেত্রকোনা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক ও মদন শাখার ব্যবস্থাপক নিরাময় সরকার বলেন, গত ঈদের আগে বিভিন্ন প্রকারের ভাতা (বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, হিজড়া ভাতা প্রভৃতি) বিতরণ করতে গিয়ে গ্রাহকদের প্রচুর ভিড় সামলাতে হয়েছে। ওই সময় চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব হয়নি। এ কারণে অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে।

সোনালী ব্যাংকের নেত্রকোনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক রাসমোহন সাহা জানান, আক্রান্ত শাখাগুলোতে অন্যান্য শাখা থেকে অতিরিক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী পাঠিয়ে সেবা চালু রাখা হয়েছে।

কৃষি ব্যাংকের নেত্রকোনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম বলেন, কিছু অসচেতন গ্রাহক কোনোভাবেই নিরাপদ দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি মানতে চান না। তাঁদের সেবা দিতে গিয়েই বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বোচ্চ সাবধানে সেবা দিতে বলা হচ্ছে।

সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম জানান, নেত্রকোনায় গত ২ এপ্রিল থেকে শনিবার রাত পর্যন্ত পরীক্ষাগারে পাঠানো নমুনার সংখ্যা ৪ হাজার ৩১২টি। এর মধ্যে ৪ হাজার ১৫৬টির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। তাতে ২৯৪ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ, ইউএনও, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, ব্যাংকার, পোশাককর্মী, শিক্ষক, পুলিশসহ বিভিন্ন পেশাজীবী রয়েছেন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১০৬ জন এবং মারা গেছেন ৩ জন।