বেনাপোল স্থলবন্দর: পণ্য আমদানি শুরু, কার্যক্রমে গতি নেই

বেনাপোল স্থলবন্দর। ফাইল ছবি
বেনাপোল স্থলবন্দর। ফাইল ছবি

আড়াই মাস পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি শুরু হলেও এ কার্যক্রমে গতি আসেনি। আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ভারত থেকে পণ্য নিয়ে কোনো ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি।

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর রোববার বিকেল থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি শুরু হয়। প্রথম দিন ২৪ ট্রাক মোটর গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়। তবে সোমবার সকাল থেকে আমদানি কার্যক্রম নেই।

জানতে চাইলে বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আবদুল জলিল বলেন, ‘আমদানি কার্যক্রম থমকে গেছে, তা ঠিক বলা যাবে না। রোববার থেকে পণ্য আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অবশ্য সোমবার দুপুর পর্যন্ত কোনো পণ্য আমদানি হয়নি। ভারত সরকার বেনাপোল বন্দর দিয়ে তাদের পণ্য রপ্তানি অব্যাহত রাখবে, আমাদের কাছে এমন বার্তাই রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার প্রস্তুতির কারণেই হয়তো তারা পণ্য পাঠাতে দেরি করছে।’

বন্দর ব্যবহারকারীদের মাধ্যমে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে গত ২২ মার্চ থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত ২৪ এপ্রিল আমদানি-রপ্তানি চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। স্বল্প পরিসরে পাট ও ভুট্টার বীজ আমদানি হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমতি না থাকায় তা আবার বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা বিশেষ করে ট্রান্সপোর্ট সমিতি বাংলাদেশে পণ্য আমদানিতে বাধার সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘ভারত সরকার বেনাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বারবার চিঠি দিলেও চালু করেনি। পরে রেলপথে আমদানি শুরু হয়। এতে পশিমবঙ্গের বনগাঁ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম ভেঙে যায়। ওই সিন্ডিকেট অহেতুক ও অপ্রয়োজনে ট্রাক আটকে রেখে টাকা আদায় করত। যে কারণে প্রতি ট্রাকে আমাদের মাশুল গুনতে হয়। রেলপথে পণ্য আমদানির অনুমতি দেওয়ায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। হয়রানি বন্ধ হয়েছে। তবে বনগাঁ সিন্ডিকেট ক্ষুব্ধ হয়েছে। তারা রেলপথে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাতিল করার জন্য বাহানা করছে। সড়কপথে আমদানি বাণিজ্য চালু হলেও তারা তা আবার বন্ধ করে দিয়েছে।’

মতিয়ার রহমান আরও বলেন, দুই দেশের কূটনৈতিকভাবে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। দুই দেশের বাণিজ্য, অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ও বন্দর ব্যবহারকারীদের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।

বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কা থাকায় আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক সীমান্ত অতিক্রমের আগেই ট্রাকচালকদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। ট্রাক উভয় দেশে স্যানিটাইজ করতে হবে। শুধু চালকেরাই পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন। দ্রুততম সময়ে পণ্য খালাস করে দিনের মধ্যেই ট্র্রাক নিজ নিজ দেশে ফিরে যাবে।