নেশা যাঁর নমুনা সংগ্রহ

ইউনুছ খান।
ইউনুছ খান।

গত আড়াই মাসে তিনি সংগ্রহ করেছেন ৪২০টি নমুনা, যার একটিও নষ্ট হয়নি। এরই মধ্যে একবার অসুস্থ হয়েছেন। কিন্তু থেমে থাকেননি। নমুনা সংগ্রহে কখনো রোগীর বাড়িতে, আবার কখনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটছেন তিনি। এ যেন তাঁর নেশায় পরিণত হয়েছে।

ইউনুছ খান চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব)।

ইউনুছ শোনান করোনার নমুনা সংগ্রহে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, এক দিনের অনলাইন প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজে নেমে পড়তে হয় তাঁকে। প্রশিক্ষণ পাকাপোক্ত করতে গুগল-ইউটিউবের সহযোগিতা নেন। ২৬ মার্চ প্রথম নমুনা সংগ্রহ করেন।

শুরুতে দুটি ভয় কাজ করেছিল তাঁর। একটি ছিল, যে নমুনাটি সংগ্রহ করছেন, সেটি যথাযথ হচ্ছে কি না। অন্য ভয়টি ছিল নিজে আক্রান্ত হওয়ার।

তাঁর কথায়, নমুনা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও লেবেলিং করা যথাযথ না হলে, সেটির ফলাফল ‘ফলস নেগেটিভ’ আসতে পারে। এতে রোগী নেগেটিভ ফলাফলের কারণে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াবেন। ফলে রোগী সুস্থ মানুষে সংক্রমণ ঘটাবেন। এ ছাড়া ল্যাব থেকেও নমুনাটি ফিরিয়ে দিতে পারে।

ইউনুছ খান বলেন, প্রথম দিন নমুনা সংগ্রহ শেষে বাড়ি ফিরে স্ত্রী-কন্যাদের থেকে আলাদা থাকা শুরু করেন তিনি। এভাবে ১৫ দিন কেটে যাওয়ার পর শিশুকন্যাদের কান্নাকাটিতে আর আলাদা থাকতে পারেননি। বিপত্তি ঘটে ঈদের ঠিক দুই দিন আগে, যখন তাঁর জ্বর ও পুরো শরীরে ব্যথা শুরু হয়। পরদিন নিজেই নিজের নমুনা সংগ্রহ করেন। ঈদের পরদিন প্রতিবেদন আসে তাঁর করোনা নেগেটিভ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, প্রচণ্ড রোগীর চাপ। কিন্তু ইউনুছকে কখনো বিরক্ত হতে দেখিনি। ছুটিও কাটাতে পারছেন না। নমুনা সংগ্রহ, সংরক্ষণ করে পরীক্ষাগারে পাঠানোর কাজ খুব দক্ষতার সঙ্গে করেন তিনি।