বগুড়ায় এক দিনে ৮৮ জনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় তরুণ ও যুবকেরা বেশি কোভিড-১৯–এ (করোনাভাইরাস) আক্রান্ত হচ্ছেন। জেলায় গতকাল সোমবার পর্যন্ত ৮৭৮ জনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী মানুষ ৩৯০ জন। এই বয়সীদের সংক্রমণের হার ৪৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০৩ জন নারী এবং ৫২ জন শিশু রয়েছে। ৭০ বছরের বেশি বয়সের প্রবীণ রয়েছেন ১১ জন। 

চলতি মাসের আট দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮০ জন, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৫৫ শতাংশ। এর মধ্যে সর্বশেষ গতকাল রাত নয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ৮৮ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১ জন।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ এবং বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবরেটরিতে ২৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৯৭ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৮৮ জন বগুড়ার বাসিন্দা রয়েছেন। করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া অন্য ৯ জনের মধ্যে নওগাঁর ৫, সিরাজগঞ্জের ২, জয়পুরহাট ও গাইবান্ধার ১ জন করে রয়েছেন।

বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল রাতে প্রতিদিনের মতো অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন। ডেপুটি সিভিল সার্জন বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ল্যাবরেটরিতে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে বগুড়ার ৫১ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এ ছাড়া এখানে নওগাঁর ২, সিরাজগঞ্জের ২ এবং জয়পুরহাটের একজনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।


অন্যদিকে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজে ৭৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে বগুড়ার ৬৭টি নমুনার মধ্যে ৩৭ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। বাকি আটটি নমুনার মধ্যে নওগাঁর ৩ ও গাইবান্ধার ১ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬২৩ জন পুরুষ, ২০৩ জন নারী ও ৫২ জন শিশু রয়েছে। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সর্বোচ্চ ৬৭২ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মধ্যে বগুড়া শহরে সর্বোচ্চ ৫৮৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অন্য উপজেলার মধ্যে শাজাহানপুরে ৬০ জন, গাবতলীতে ৪৮ জন, কাহালুতে ২৭ জন, শেরপুরে ৪৩ জন, শিবগঞ্জে ১৫ জন, আদমদীঘিতে ১৪ জন, সারিয়াকান্দিতে ২৩ জন, সোনাতলায় ১৯ জন, দুপচাঁচিয়ায় ১৫ জন, ধুনটে ১৪ জন ও নন্দীগ্রাম উপজেলায় ১৩ জন আছেন।

ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে মারা গেছেন এক রোগী। এ নিয়ে জেলার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের আইসোলেশনে কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হয়ে দুজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, একজন কলেজশিক্ষক, দুজন নারীসহ আটজনের মৃত্যু হলো।
এ হিসাবের বাইরে করোনায় সংক্রমিত হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বগুড়ার একজন চিকিৎসক, একজন সাংবাদিক, একজন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, একজন পুলিশ, একজন আনসার কর্মকর্তাসহ মোট ছয়জন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, সংক্রমণের হারে এগিয়ে থাকলেও সুস্থতায় পিছিয়ে রয়েছে এই জেলা। গতকাল পর্যন্ত বগুড়ায় ৭২ জন করোনামুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে ৩৬ জন এবং বাকিরা বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছেন। সুস্থতার হার মোট আক্রান্তের ৮ শতাংশ।