কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যাত্রী বহনে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ, স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচলের সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। নৌযানগুলোয় ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহনের কথা থাকলেও সেগুলো অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। ৭ জুন, কাজীরহাট, বেড়া, পাবনা। ছবি: বরুন রায়
কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ, স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচলের সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। নৌযানগুলোয় ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহনের কথা থাকলেও সেগুলো অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। ৭ জুন, কাজীরহাট, বেড়া, পাবনা। ছবি: বরুন রায়

কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ, স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচলের সময় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। নৌযানগুলোর ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহনের কথা থাকলেও সেগুলো অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। এ ছাড়া প্রচুর যাত্রী মাস্ক ব্যবহার না করেই চলাচল করছেন। কিন্তু এই অনিয়ম দেখার যেন নেই কেউ।

যাত্রী ও কাজীরহাট নৌঘাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, উত্তরাঞ্চলের পাবনা, নাটোর, রাজশাহীসহ কয়েকটি জেলার যাত্রীদের ঢাকায় যাতায়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথ ব্যবহারে আগ্রহ বেড়েছে। সড়কপথে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকায় যাতায়াতে ভাড়া বাড়ানোর পাশাপাশি সময় বেশি লাগায় এই নৌপথে যাত্রীর চাপ বেশি। আর এই সুযোগে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ইঞ্চিনচালিত নৌকাগুলো সরকারি বিধি না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত নৌকায়। এ তিন ধরনের নৌযানেই যাত্রী ওঠানো হচ্ছে গাদাগাদি করে।

কাজীরহাট নৌঘাট এলাকার ইঞ্জিনচালিত নৌকাগুলোর মালিকদের নেতৃত্বে রয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্য ঠাণ্ডু শেখ। তিনি জানান, কাজীরহাট থেকে প্রথম লঞ্চ ছেড়ে যায় সকাল পৌনে ১০টায়। সকাল থেকে ওই সময়ের আগে কোনো লঞ্চ না থাকায় যাত্রীরা ঘাটে এসে বিপাকে পড়ে যান। তাই যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে সকাল ৮টা থেকে পৌনে ১০টার মধ্যে তিনটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা কাজীরহাট থেকে ছেড়ে যায়। তিনি দাবি করেন, ইঞ্জিনচালিত নৌকার কারণে গরিব যাত্রীরা উপকৃত হচ্ছে এবং কোনো রকম ভাড়া বাড়ানো হয়নি। অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হয় না দাবি করে তিনি বলেন, নৌকায় জীবাণুনাশক ছিটানো হয়।

লঞ্চ ও স্পিডবোটের যাত্রীরা জানান, বাসে মোটামুটি নিরাপদে ঘাটে এলেও যমুনা নদী পার হতে গিয়েই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। লঞ্চে ওঠা ও নামার সময়ে যেমন একে অপরের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হচ্ছে, তেমনি লঞ্চের মধ্যে শারীরিক দূরত্বও বজায় রাখা যাচ্ছে না। ঠিক একইভাবে স্পিডবোটেও স্বাভাবিক সময়ের মতো গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে। এ কারণে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। যাত্রীরা অভিযোগ করে জানান, স্পিডবোট ও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার ব্যাপারে প্রতিবাদ করার পরেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

কাজীরহাট নৌঘাটে স্পিডবোট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, স্পিডবোটের ভাড়া আগের মতোই ২০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় যাত্রী কমিয়ে যাতায়াত করা হলে স্পিডবোটের মালিকদের লোকসান গুনতে হবে। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বাভাবিক যাত্রী বহন করা হচ্ছে। তবে সরকার ভাড়া বাড়ানোর অনুমতি দিলে বাসের মতো তাঁরাও কম যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করবেন।

কাজীরহাট নৌঘাটে দায়িত্ব পালনকারী বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) খালেদ মোশারফ বলেন, ‘আমাদের কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী লঞ্চগুলোকে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী নিতে দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে অতিরিক্ত একটি যাত্রীও আমরা নিতে দিচ্ছি না। আর স্পিডবোটগুলোয় ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিতে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, ইঞ্জিনচালিত কোনো নৌকা এ ঘাট থেকে যাচ্ছে না। এগুলো হয়তো ঘাট থেকে দূরে অন্য কোনো স্থানে যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে।’