বদরগঞ্জে সরকারি খাদ্যগুদামে ২১ দিন ধরে ধান কেনা বন্ধ

রংপুরের বদরগঞ্জে সরকারি খাদ্যগুদামে ২১ দিন ধরে বোরো ধান কেনা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে বাজারে কৃষকদের ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।

বদরগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত ২০ মে খাদ্যগুদামে বোরো ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়েছে। এদিন রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেনের কাছ থেকে এক টন ধান কেনার পর থেকে প্রশাসনিক জটিলতায় ধান কেনা আর সম্ভব হয়নি।

খাদ্যগুদাম কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ৩ হাজার ৬৬ মেট্রিক টন ধান কেনার কথা রয়েছে। ক্রয় অভিযান চলার কথা আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে প্রতি কেজি ধান বিক্রি হচ্ছে ২২-২৩ টাকায়।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় জানায়, উপজেলায় ১৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ধানের ফলন হয়েছে বাম্পার। গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ধান কাটা ও মাড়াই চলছে। আজ বুধবার পর্যন্ত উপজেলায় ৭৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মো. জোবাইদুর রহমান বলেন, ‘আমরা বোরোচাষিদের তালিকা এক মাস আগেই খাদ্যগুদামে সরবরাহ করেছি। অন্য বছরের চেয়ে এবার স্থানীয় হাটবাজারে ধানের দাম মোটামুটি ভালো। কিন্তু সরকারি খাদ্যগুদামে ধান ক্রয় অভিযান অব্যাহত থাকলে বাজারে তার প্রভাব পড়ে। এতে ধানের দাম বাজারে কিছুটা বেড়ে যায়।’

স্থানীয় ধান ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার স্থানীয় হাটবাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে ৬৫০ টাকায়। আমরুলবাড়ি গ্রামের কৃষক আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘বাজারে প্রতি কেজি ধান বিক্রি হচ্ছে ২২-২৩ টাকায়। সেই ধান সরকার কিনবে ২৬ টাকা কেজি। কিন্তু গুদামে ধান কেনার উদ্বোধন করার পর থেকে আর তা কেনা হচ্ছে না। এখন কিনলে কৃষক লাভবান হতে পারত। মনে হচ্ছে, কৃষকের ঘরের ধান শেষ হওয়ার পর সরকারি গুদামে ধান কেনা শুরু হবে।’

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ছায়েদুল ইসলাম বলেন, গুদামে ধান কেনার উদ্বোধন করার পর থেকে আর কেনা হয়নি। এখানে ধান বরাদ্দের চেয়ে কৃষকের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত রোববার উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মধ্যে ৪ ইউনিয়নের ১১ হাজার কৃষকের লটারি করে ৮৮৫ জন নির্বাচন করা হয়েছে। প্রত্যেক কৃষকের কাছে এক টন করে ধান কেনা হবে। কিছু জটিলতার কারণে এখনো নির্বাচিত কৃষকের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। শিগগিরই তা প্রকাশ করে গুদামে ধান কেনা শুরু করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষকের তালিকা অচিরেই প্রকাশ করে ধান ক্রয় অভিযান শুরু করা হবে। এ তালিকার বাইরে অন্য কেউ গুদামে ধান বিক্রি করতে পারবেন না।