হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল, এসির বৈদ্যুতিক গোলযোগে আগুন: তদন্ত প্রতিবেদন

রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ‘করোনা ইউনিটে’ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতিকে দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের গঠন করা তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটি সাত কর্মদিবস শেষে গতকাল বুধবার ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। গত ২৭ মে রাতে রাজধানীর গুলশান-২–এর ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আগুন লাগে। ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে ফায়ার সার্ভিস।

তদন্ত কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ গতকাল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মহাপরিচালক পরে ওই তদন্ত প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ফায়ার সনদ ছাড়া ওই করোনা ইউনিটে অগ্নিনির্বাপণের সরঞ্জাম ছিল না। ত্রুটিপূর্ণ জেনেও পুরনো শীততাপনিয়ন্ত্রিত (এসি) যন্ত্র বসানো হয়েছে করোনা ইউনিটে। এসির বৈদ্যুতিক গোলযোগে আগুন লাগে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘ভষ্মীভূত করোনা ইউনিটটি অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছিল। অবকাঠামো পারটেক্স দিয়ে তৈরি, যা অতিমাত্রায় দাহ্য। আগুন যখন লেগেছে, তাৎক্ষণিকভাবে একসঙ্গে পুরোটায় লেগে যায়। দায়িত্বরত কর্মকর্তারা নিজের প্রাণ বাঁচাতে সবাই বেরিয়ে নিরাপদে চলে যান। আগুন লাগার সময় রোগীদের বাাঁচানোর চেষ্টা করা হয়নি। এ কারণে আগুন লাগার পর একজন রোগীও বের হতে পারেননি। সেখানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ অতিদাহ্য অনেক পদার্থ রাখা ছিল।’

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মূলত আগুন লাগার কারণ, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার দুর্বলতার বিষয়কে তদন্তে অগ্রাধিকার দিয়েছি। অগ্নিকাণ্ডের কারণ, ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির বিবরণ এবং একই সঙ্গে প্রতিকারের সুপারিশ করেছি। তারা করোনা ইউনিটে কোনো ধরনের ফায়ার এক্সিট রাখেনি। সেখানে ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল।’

গত ২৭ মে রাতে গুলশান–২ নম্বরের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আগুন লাগে। করোনা ইউনিটে থাকা পাঁচজন রোগী আগুনে পুড়ে মারা যান। ওই পাঁচজনের মধ্যে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। বাকি দুজনের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।