ঢাকা শহর লকডাউন ঘোষণা চেয়ে রিট

প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রথম আলো ফাইল ছবি

ঢাকা শহরকে লকডাউন ঘোষণা ও চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত হাই ফ্লো নাজাল অক্সিজেন ক্যানুলা সংগ্রহের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ বৃহস্পতিবার ই-মেইলের মাধ্যমে রিটটি জমা দেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারে ইতিমধ্যে লকডাউন চলছে। এ অবস্থায় ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকা লকডাউন ঘোষণা চেয়ে আজ রিট হলো।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, পুরো ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকা দ্রুত লকডাউন ঘোষণার জন্য ও এই সময় সিটি করপোরেশনের মেয়ররা কমিশনারদের (কাউন্সিলর) মাধ্যমে প্রতিটি এলাকায় গরিবদের প্রয়োজনে খাদ্য ও মেডিসিন সরবরাহ করবেন, সে বিষয়ে রিটে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। ওই কাজে সরকার লজিস্টিক সাপোর্ট দেবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত হাই ফ্লো নাজাল অক্সিজেন ক্যানুলা সংগ্রহের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে। রোববার রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।

রিট আবেদনকারী হলেন আইনজীবী মো. মাহবুবুল ইসলাম। রিটে মন্ত্রিপরিষদ, স্বাস্থ্য, অর্থ ও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালায়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল), অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন), ঢাকার পুলিশ কমিশনার, র‍্যাবের মহাপরিচালক ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনকারীর আইনজীবীর ভাষ্য, করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণে ঢাকা শহরে হাজার হাজার রোগী শনাক্ত হচ্ছে। ইতিমধ্যে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। সরকার গত ১৮ এপ্রিল অধ্যাপক মো. শহিদুল্লাহকে সভাপতি করে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় পরে ওই কমিটি সর্বশেষ ৮ জুন এক সভায় সর্বসম্মতভাবে মৃত্যু কমানোর জন্য কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কার্যকরে সুপারিশ করে, যার মধ্যে ঢাকা শহরকে কড়াকড়িভাবে সম্পূর্ণ ‘লকডাউন’ করার কথা রয়েছে। তা না হলে মৃত্যু মেনে নিতে হবে। ‘এলাকাভিত্তিক লকডাউন’ কোনো সুফল বয়ে আনবে না। হলুদ জোন, লাল জোন মিলেমিশে আছে। ‘ঢাকাকে পুরোপুরি লকডাউন করতেই হবে’, এ ধরনের স্পষ্ট ‘অ্যাভিডেন্স বেজড’ বা ডেটা বিশ্লেষণ করে পরামর্শ দিয়েছে এপিডেমোলজিস্টদের সমন্বয়ে গড়া সাবকমিটি। বিস্তারিত আলোচনার পর জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির আলোচকেরা এপিডেমোলজিস্টদের সঙ্গে একমত হন এবং সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত করা হয়। বারবার পরামর্শ ও তাগিদ দেওয়ার পর এখনো জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনীয় একটি চিকিৎসা কৌশল, হাই ফ্লো নাজাল অক্সিজেন ক্যানুলার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়নি। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারভিত্তিতে কালক্ষেপণ না করে অনতিবিলম্বে এর যোগান নিশ্চিত করার জোরালো তাগিদ পাস করা হয়। এ ব্যবস্থাপনায় সব ধরনের জটিলতা দূর করে, প্রয়োজনে আলাদা রেজল্যুশন করে মানুষের জীবন রক্ষায় হাই ফ্লো নাজাল অক্সিজেন ক্যানুলার পর্যাপ্ত প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে বলে মতামত দেন পরামর্শকেরা। চিকিৎসকেরা ব্যাপক হারে মারা যাচ্ছেন ও সংক্রমিত হচ্ছেন। তাঁদের চিকিৎসা সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও সেবা ভেঙে পড়বে। সুতরাং কোভিড-১৯ সংক্রমিত চিকিৎসকদের (স্বাস্থ্যকর্মীসহ) যথাযথ চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন সরবরাহের সার্বিক সুবিধাসহ আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা কালক্ষেপণ না করে নিশ্চিত করতে হবে।