ভার্চ্যুয়াল আদালতের কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চলবে

দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ ও শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে হাইকোর্ট ও দেশের অধস্তন আদালতে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য এসেছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ৯ মে ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ জারি করে সরকার। ফলে অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার সুযোগ তৈরি হয়। অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে পৃথক প্রাকটিস নির্দেশনা (ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা) প্রকাশ করা হয়। পর ১১ মে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।

সর্বশেষ গত ৩০ মে অধস্তন দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে অতি জরুরি বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে শুনানি ও প্রয়োজনীয় আদেশ দেওয়ার বিষয়ে অনুসরণীয় অতিরিক্ত প্রাকটিস নির্দেশনা জারি করা হয়। সেদিনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই নির্দেশনা ১৫ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এ হিসেবে আজ মেয়াদ শেষের দিন।
এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশক্রমে আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৩০ মের বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩০ মে জানানো হয়, ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে ওই দিন জানানো হয়, ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১১টি বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য বেঞ্চগুলো গঠন করে দেওয়া হয়।
এ অবস্থায় আজ সোমবার হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির তথ্য, ১৬ মে থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ এবং এই কোর্ট থেকে জারি করা প্রাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ পরিচালনার জন্য প্রধান বিচারপতি বেঞ্চগুলো গঠন করেছেন। এতে ১৩টি পৃথক একক বেঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতির নাম ও তাঁদের অধিক্ষেত্র উল্লেখ রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, ১৩ বিচারপতি হলেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন, বিচারপতি জে বি এম হাসান, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল, বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম, বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান। হাইকোর্টের এই ১৩টি বেঞ্চে আবেদন করার জন্য পৃথক ই–মেইল ঠিকানাও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে ১০ জুন আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল আলম ভূঞা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে অপর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে ৩০ জুন পর্যন্ত আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে বিচার কার্যক্রম চলবে। আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ১৬, ২৩ ও ৩০ জুন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে শুনানি গ্রহণ করবেন।