নওগাঁয় করোনা রোগীর সেরে ওঠার হার বাড়ছে

নওগাঁয় কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থতার হার বাড়ছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত জেলায় সুস্থ হয়েছেন ১৬০ জন, যা মোট আক্রান্তের ৭২ শতাংশের বেশি। ৬ জুন পর্যন্ত এ হার ছিল ৬২ শতাংশ। কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে জেলায় এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের দিক থেকে রোগীদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া, সার্বক্ষণিক ফলোআপ করা, আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশের জটিল কোনো উপসর্গ না থাকা ও তুলনামূলকভাবে এ জেলায় বয়স্ক ও শিশুরা কম আক্রান্ত হওয়ায় করোনা রোগীরা দ্রুত সেরে উঠছেন বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

নওগাঁর সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল জেলায় সর্বপ্রথম একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এর ৩৪ দিনের ব্যবধানে অর্থাৎ ২৬ মে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়ায়। তখন সুস্থতার হার ছিল ৫১ শতাংশ। ৬ জুন জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪৬। সে সময় সুস্থতার হার ছিল ৬২ দশমিক ৩২ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত জেলায় ২২০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৬০ জন। সুস্থতার হার ৭২ দশমিক ৭২ শতাংশ।

গতকাল একজনকে সুস্থ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আত্রাই উপজেলায় শনাক্ত হওয়া ১০ জন কোভিড রোগীর সবাই সুস্থ হলেন। রানীনগর উপজেলায় শনাক্ত হওয়া ২৫ জন কোভিড রোগীর মধ্যে ২৪ জনই সুস্থ হয়েছেন।

জেলায় কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন চারজন। তাঁদের তিনজনই নওগাঁ সদর উপজেলার ও একজন পোরশা উপজেলার বাসিন্দা। এখন পর্যন্ত এ জেলায় করোনা রোগী রয়েছেন ৫৭ জন।

নওগাঁর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, সুস্থ হওয়া ১৬০ রোগীর মধ্যে ১৫৬ জনই বাড়িতে থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া ২২১ জন করোনা রোগীর মধ্যে মাত্র ৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকি ৫৭ জন রোগীর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন দুইজন।

সুস্থ হয়ে ওঠা বেশ কয়েকজন রোগী ও চিকিৎসক বলেন, করোনায় আক্রান্ত হলে কোনো ধরনের ভয় বা গুজবে কান দিয়ে মনোবল দৃঢ় করতে হবে। জটিল কোনো উপসর্গ দেখা না দিলে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুসরণ করলে বাড়িতে থেকেই কোভিড-১৯ রোগ থেকে সেরে ওঠা সম্ভব।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোমিনুল হক বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোভিড-১৯ শনাক্ত রোগীর মধ্যে জটিল কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। এসব রোগী মনোবল দৃঢ় করে নিয়ম মেনে চললেই সুস্থ হয়ে উঠবেন। জটিল কোনো উপসর্গ দেখা না দিলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

নওগাঁর সিভিল সার্জন আকন্দ মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ হতে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। আক্রান্তের লক্ষণগুলোর মাত্রা, বয়স ও রোগীর অন্যান্য স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর নির্ভর করে তাঁদের সেরে উঠতে সময় লাগবে। আক্রান্ত রোগীদের সেরে উঠতে দুই থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তবে আশার কথা হচ্ছে, নওগাঁয় করোনায় আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীর মধ্যে দেখা দেওয়া লক্ষণগুলো মৃদু। ফলে তাঁরা দ্রুত সেরে উঠছেন। শুরুতে করোনা রোগীর সেরে ওঠার হার কম থাকলেও এখন দ্রুত সেরে ওঠার হার বাড়ছে।