নাটোরে প্রথম ৫০ দিনে শূন্য, পরের ৫০ দিনে ১০১

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পরও প্রথম ৫০ দিনে নিরাপদ ছিল নাটোর। ওই সময়ে জেলায় কোনো করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। অথচ পরের ৫০ দিনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আরও দুই স্বাস্থ্যকর্মীসহ পাঁচজনের শরীরে করোনা শান্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১০১। এ সময়ের মধ্যে অর্ধেকের বেশি রোগীই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। শনাক্ত হওয়ার আগেই মারা গেছেন একজন। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে শুক্রবার এসব তথ্য জানা গেছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন ৮ মার্চ। তবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় একজন রোগীও শনাক্ত হননি। প্রধানমন্ত্রী এ ঘটনায় সে সময় নাটোরের প্রশাসনকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন। পরে ২৮ এপ্রিল একযোগে আটজন করোনারোগী শনাক্ত হয়। এরপর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে করোনারোগীর সংখ্যা। ১৮ মে ১৯ পুলিশসহ এক দিনেই ৩০ জন করোনারোগী শনাক্ত হয়। ২০ মে পাঁচজন ও পরের সপ্তাহে ২৩ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর প্রায় প্রতি দিনই করোনারোগী বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ১৭ জুন আটজন এবং ১৮ জুন পাঁচজন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে ১০০ দিনে মোট ১০১ জন রোগী শনাক্ত হলো।

নাটোরে করোনারোগী শনাক্ত হওয়ার প্রথম দিনই (২৮ এপ্রিল) একজনের মৃত্যু হলেও পরবর্তী সময়ে শনাক্ত হওয়া কেউ মারা যাননি। বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৫১ জন। বর্তমানে ৪৯ জন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই সরকারি চাকরিজীবী। বিশেষ করে পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যাই বেশি। তাঁদের বেশির ভাগই সুস্থ হয়ে আবার কাজে যোগ দিয়েছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করেছে।

প্রথম ৫০ দিনে রোগী না থাকা এবং পরের ৫০ দিনে শতাধিক আক্রান্ত হওয়া প্রসঙ্গে জেলার সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা লোকজনকে প্রায় শতভাগ বাড়িতে রাখতে সক্ষম হয়েছিলাম। ফলে কেউ আক্রান্ত হননি। পরবর্তী সময়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে পোশাককর্মীসহ নানা পেশার মানুষ যখন নাটোরে ফিরতে শুরু করে, তখন করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। ঈদে সংক্রমণ আরও বেড়ে যায়। তবে ব্যাপক নজরদারির কারণে রোগীর সংখ্যা এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি।’

করোনার বিস্তার ঠেকাতে জেলার মহাসড়কগুলোতে একাধিক চেকপোস্ট বসিয়ে বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।

জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, 'আমরা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা প্রতিনিয়ত মাঠে আছি। তবে প্রথম দিকে শতভাগ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা অব্যাহত রাখতে পারিনি। কিন্তু আক্রান্তের হার অন্য জেলার তুলনায় এখনো অনেক কম। আমরা প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও জোরদার করব।'