করোনা-আতঙ্কে কেউ এল না, দাফন করল পুলিশ

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার একটি সড়কের পাশে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে ছিল। এতে করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই ব্যক্তির মারা যাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে আতঙ্কে লাশের পাশে কেউ আসেননি। খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। পরে কবর খোঁড়া থেকে শুরু করে লাশের জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।

মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম নাজিম উদ্দিন (৪৫)। তিনি গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলংয়ের হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা। গত বুধবার সন্ধ্যার পর নাজিম উদ্দিন ওষুধ কেনার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। আর বাড়ি ফেরেননি। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জাফলং চা–বাগানসংলগ্ন হাজীপুর সড়ক থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, কৃষিকাজ করতেন মো. নাজিম উদ্দিন। বুধবার সন্ধ্যায় শরীরে ব্যথার ওষুধ আনার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। গতকাল ভোরে স্থানীয়দের মাধ্যমে পরিবারের লোকজন খবর পান জাফলং চা–বাগানের পাশে হাজীপুর সড়কে তাঁর লাশ পড়ে আছে। তবে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে কেউ তাঁর লাশ উদ্ধারে এগিয়ে আসছেন না। এমন খবর পেয়ে গোয়াইনঘাট থানার পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করেন। পরে তাঁরা নিজেরাই কবর খোঁড়েন, লাশের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করেন।

নাজিম উদ্দিনের বড় ভাই কাওসার আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাইয়ের লাশ সড়কের পাশে পড়ে থাকার বিষয়টি স্থানীয় বেশ কয়েকজন গতকাল ভোরে তাঁদের জানান। ভয়ে কেউই লাশ উদ্ধার করতে এগিয়ে যাননি। পরে পুলিশ সদস্যরা লাশ উদ্ধার করে বৃষ্টির মধ্যে কবর খুঁড়ে দিয়েছেন। তাঁদের ব্যবস্থাপনায় জানাজা পড়ানো হয়েছে। জানাজায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তাঁদের পরিবারের কয়েকজন ও পুলিশ সদস্যরা অংশ নেন।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আহাদ বলেন, বিষয়টি সিলেটের পুলিশ সুপারকে জানানো হয়। তাঁর নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা লাশ উদ্ধার করে কবর খোঁড়েন এবং বিকেলে দাফন সম্পন্ন করেন। তিনি আরও বলেন, পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।