খুলনার চিকিৎসক হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

আবদুর রকিব খান
আবদুর রকিব খান

খুলনায় চিকিৎসক আবদুর রকিব খান হত্যা মামলার প্রধান আসামি জমির শেখ আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার আরও দুই আসামি আবদুল আলী ও গোলাম মোস্তফাকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর মধ্যে আবদুল আলী ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

আজ শুক্রবার দুপুরের দিকে তাঁদের আদালতের কাছে সোপর্দ করা হয়। গত বুধবার রাতে তাঁদের টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের সেখান থেকে খুলনায় নিয়ে আসা হয়। এর আগে বুধবার রাতে আরও দুই আসামি খুলনার রূপসা এলাকা থেকে খাদিজা বেগম ও মঙ্গলবার রাতে ডুমুরিয়া থেকে আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আবদুর রহিমকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। আর এজাহারবহির্ভূত অজ্ঞাতনামা আসামিদের মধ্যে গ্রেপ্তার খাদিজা বেগম আদালতের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।

খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বলেন, চিকিৎসক রকিব খান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান আসামি জমির শেখ খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুস সামাদের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার খাদিজা বেগম নামের আরেক আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। গ্রেপ্তার অন্য তিন আসামিকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

১৪ জুন খুলনা নগরের গল্লামারী এলাকায় অবস্থিত রাইসা ক্লিনিকে শিউলি বেগম নামের এক নারীর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হয়। প্রথম দিকে সন্তান ও মায়ের শরীর ভালো থাকলেও রাতে শিউলি বেগমের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সকালে ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী শিউলি বেগমকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন স্বজনেরা। পথিমধ্যেই মারা যান শিউলি বেগম। এ ঘটনায় ১৫ জুন রাতে শিউলি বেগমের স্বজনেরা রাইসা ক্লিনিকের মালিক চিকিৎসক আবদুর রকিব খানকে মারধর করেন। পরে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রকিব খান।

ওই ঘটনায় রকিব খানের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম খান বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় শিউলি বেগমের ভাই, স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের আসামি করা হয়।

রোগীর স্বজনদের হামলায় রকিব খান মারা যাওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন খুলনার চিকিৎসকেরা। তবে প্রথম দিনেই এজাহারভুক্ত চার আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হওয়ায় বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে, তা ৭২ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়। ওই সময়ের মধ্যে এজাহারভুক্ত অন্য আসামিকে গ্রেপ্তার, সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার ও চিকিৎসকের মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে না নেওয়া হলে আবার কর্মবিরতি পালন করার হুমকি দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের ওই সময় বেঁধে দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার হচ্ছে আজ।