আদালতের ২০ বিচারক ও ৮৩ কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে বিচারকাজ পরিচালনা ও দায়িত্ব পালনের সময় এ পর্যন্ত সারা দেশের অধস্তন আদালতের ২০ জন বিচারক করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের ২৪ জন কর্মচারী ও অধস্তন আদালতের ৫৯ জন কর্মচারী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়া কোভিড-১৯–এর উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে আছেন আরও ছয়জন বিচারক।

সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান আজ শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, মাদারীপুর জেলা জজ আদালতের জারিকারক মো. কাউসার ১৮ জুন এবং নওগাঁ জেলা জজ আদালতের অফিস সহায়ক মহিউদ্দিন মোহন ১৯ জুন কোভিড-১৯–এর উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তাঁদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, প্রথম গত ২২ মে নেত্রকোনার জেলা ও দায়রা জজ শাহাজাহান কবির করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। একই দিন মুন্সিগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রোকেয়া রহমান আক্রান্ত হন। বর্তমানে তাঁরা সুস্থ হয়ে আবার কাজে যোগ দিয়েছেন। এ মুহূর্তে ঢাকা সিএমএইচের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন বিচারক ফেরদৌস আহমেদ। লালমনিরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফেরদৌস আহমেদকে (জেলা জজ) প্লাজমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮–এর বিচারক বেগম শামীম আহমেদ (সিনিয়র জজ) ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে এবং জয়পুরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রুস্তম আলী (জেলা জজ) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ওই পাঁচ বিচারক ছাড়া অধস্তন আদালতের অপর ১৫ বিচারক করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজ নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন। তাঁরা হচ্ছেন কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কিরন শংকর হালদার (জেলা জজ), ভোলার জেলা ও দায়রা জজ এ বি এম মাহমুদুল হক, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের উপসচিব এস মোহাম্মদ আলী (জেলা জজ), কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম, বরিশালের অতিরিক্ত জেলা জজ মুহাম্মাদ মাহবুব আলম, সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ মাসুদ পারভেজ, নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ মাসুদ জামান, কুড়িগ্রাম ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. তৈয়ব আলী, নেত্রকোনার সহকারী জজ মো. মেহেদী হাসান, চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দে, চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেহ মোহাম্মদ নোমান, নোয়াখালীর হাতিয়ার চৌকি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নিজাম উদ্দিন, ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ তসরুজ্জামান, খাগড়াছড়ির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান ও ডিপিডিসির স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম রেজমিন সুলতানা।

সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, সুপ্রিম কোর্ট থেকে আক্রান্ত বিচারক ও কর্মচারীর চিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা জজদের অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট থেকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং তা প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করা হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তির শেষাংশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের কোভিড-১৯–সংক্রান্ত বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া অধস্তন আদালতের বিচারকদের কোভিড-১৯–জনিত চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের অপর একটি কমিটি সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে।