কেশবপুরে করোনার নমুনা পরীক্ষায় বিড়ম্বনা

জাহানারার ক্যানস্যার ধরা পড়ে ছয় মাস আগে। এরই মধ্য তিনটি কেমোথেরাপি নিয়েছেন তিনি। পরের থেরাপিগুলো শেষ করতে দরকার করোনা পরীক্ষা। কিন্তু এই পরীক্ষা করা তাঁর পক্ষে কোনোভাবে সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, অসংখ্য সাধারণ মানুষ এখন নমুনা পরীক্ষার জন্য করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রে ভিড় করছেন। ফলে করোনা পরীক্ষা নিয়ে তিনি পড়েছেন বিড়ম্বনায়।

জাহানারার মতো কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক সাধারণ মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে এসে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন করোনা পরীক্ষার জন্যে গণহারে মানুষ আসছেন। কিন্তু সেভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।

ঢাকার যে হাসপতালে পরের কেমোথেরাপিগুলো দেওয়ার কথা, সেখান থেকে জাহানারাকে করোনা পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। জাহানারার ছেলে স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র জিল্লুর রহমান বলেন, মায়ের করোনা পরীক্ষা করা না গেলে কেমোথেরাপি দেওয়া শেষ করা যাবে না। ফলে চরম বিপাকে আছেন তাঁরা।

নূরজাহান বেগমের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। কর্মসূত্রে তিনি কেশবপুরে থাকেন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় মাঠপর্যায়ে কাজ করেন। তিনি ১২ জুন থেকে গলাব্যথা, জ্বর ও কাশিতে ভুগছেন। ১৪ জুন কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান করোনা পরীক্ষার জন্য। হাসপাতাল থেকে বলা হয়, তালিকাভুক্ত হতে হবে। পরে তালিকাভুক্ত হয়ে তিন দিন গেলেও নমুনা নেয়নি হাসপতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর তিনি মামার বাড়ি বাগআঁচড়াতে চলে যান। সেখানে তাঁর মামাও জ্বরে আক্রান্ত হন। তিনি কেশবপুরে এসে অসুস্থ অবস্থায় কাজ করে চলেছেন।

নূরজাহানের সঙ্গে কাজ করা সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার রত্না দাসও জ্বরে ভুগছেন। তিনিও হাসপাতালে গিয়ে করোনা পরীক্ষা করাতে পারেননি। তাঁরা বলছেন, হাসপাতালে গিয়ে সহজে করোনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এখন সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় গণহারে মানুষ পরীক্ষা করাতে আসছে। আমরা রোগী দেখে লক্ষণ বুঝে পরীক্ষা করাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ক্যানসার রোগী করোনা পরীক্ষা করাতে পারেননি, অভিযোগটি সত্য নয়।