বরিশাল বিভাগে করোনায় সংক্রমিত দুই হাজার ছাড়াল

বরিশাল বিভাগের করোনা (কোভিড-১৯) শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে পাওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভাগের ৬ জেলায় নতুন করে ৬৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে করোনায় সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ১৮। অপরদিকে, বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া আরও ৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় কোভিড ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হওয়ায় বিভাগে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৪১।

নতুন আক্রান্ত ৬৯ জনের মধ্যে বরিশালে ৪৭ জন, পটুয়াখালীতে ৮, ভোলায় ৩, বরগুনায় ৮, পিরোজপুরে ১ ও ঝালকাঠিতে ২ জন শনাক্ত হয়েছেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বিভাগের ৬ জেলায় নতুন শনাক্ত ৬৯ জনকে নিয়ে সংক্রমিতের জেলাভিত্তিক হিসাব—বরিশাল জেলায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ১৭১, পটুয়াখালীতে ২৩৯, ভোলায় ১৮৭, পিরোজপুরে ১৩৪, বরগুনায় ১৬৩ ও ঝালকাঠিতে মোট ১২৪ জন করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত। এর মধ্যে গোটা বিভাগে ৫২৬ জন করোনায় সংক্রমিত রোগী সুস্থ হয়েছেন।

২৪ ঘণ্টায় বিভাগে নতুন সংক্রমিত ৬৯ জন রোগীর মধ্যে ৪৭ জনই বরিশাল জেলার। এর মধ্যে ৩৭ জনই বরিশাল নগরের বাসিন্দা। জেলায় মোট সংক্রমিত ১ হাজার ১৭১ জনের মধ্যে ৯০৯ জনই নগর এলাকার।

অপরদিকে, করোনায় মারা যাওয়া ৪১ জনের মধ্যে বরিশাল জেলায় রয়েছেন ১৫ জন, পটুয়াখালীতে ১৩, ঝালকাঠিতে ৬, পিরোজপুরে ৩, ভোলায় ২ ও বরগুনায় ২ জন। তাঁদের মধ্যে মে মাসে মারা যান ১০ জন। বাকি ৩১ জনের মৃত্যু হয় চলতি মাসে।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, বরিশাল বিভাগে দিন দিন সংক্রমণ পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। গত ৯ এপ্রিল বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার ৩২ ও ৭০ বছর বয়সী দুই ব্যক্তির করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর পর তাঁদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাঁরা করোনা ‘পজিটিভ’ হওয়ার মধ্য দিয়ে বিভাগের প্রথম দুজন করোনা রোগী শনাক্ত হন। এরপর ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১৭ দিনে বিভাগে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৯। এরপর ৩১ এপ্রিল পর্যন্ত ৭ দিনে আরও ২৮ জন শনাক্ত হলে সংখ্যা বেড়ে ১১৭ দাঁড়ায়।

শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, এরপর মে মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে তা কিছুটা বাড়ে। এই ১৪ দিনে শনাক্ত ৯৯ জন বেড়ে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ২১৬। এরপর মে মাসের শেষ ২ সপ্তাহে হঠাৎ করে তা প্রায় ৩ গুণ বেড়ে হয় ৬১৭। এই ১৪ দিনে নতুন করে সংক্রমিত হন ৪০১ জন। জুনের শুরু থেকে সংক্রমণের হিসাবটা দ্রুত পাল্টে যায়। জুনের শেষ ২০ দিনে তা এক লাফে ১ হাজার ৩৯১ জন বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ১৯৮। মোট আক্রান্তের ৬৮ দশমিক ৯২ শতাংশই এই জুনে শনাক্ত হয়েছেন।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, এপ্রিলে বিভাগে প্রতিদিন সংক্রমণের সংখ্যা সর্বোচ্চ ১৫ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। মে মাসে তা ১৯ থেকে ৪০-এর ঘরে পৌঁছায়। আর জুনের শুরুর দিকে তা ছিল ৭০। এরপর ৯৫ থেকে হয় ৯৮ জন। পরে ১৪ জুন তা এক লাফে সর্বোচ্চ ১৩৩-এ পৌঁছায়।