সুস্থ হয়ে আবার নমুনা সংগ্রহে তাঁরা

আবু বকর দেওয়ান, নিবেদিতা মজুমদার, ফারুকুর রহমান, শারমিন খাতুন
আবু বকর দেওয়ান, নিবেদিতা মজুমদার, ফারুকুর রহমান, শারমিন খাতুন

এই করোনাকালে অনেকটা জেনেবুঝে নিজেদের ঝুঁকির মুখে ফেলেছিলেন নমুনা সংগ্রহকারীরা। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নাকের ভেতর থেকে সোয়াব সংগ্রহ করেন তাঁরা। পর্যাপ্ত সুরক্ষাসামগ্রী পরে দায়িত্ব পালনের পরও করোনা থেকে রেহাই পাননি। তাঁদের কাছ থেকে পরিবারের অন্য সদস্যরাও করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।

নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু বকর দেওয়ান, নিবেদিতা মজুমদার, রাশিদা খাতুন, বায়োকেমিস্ট ফারুকুর রহমান, স্বাস্থ্যকর্মী উম্মে সালমা সুপ্তি, রেনু খাতুন ও শারমিন খাতুন। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে কাজে ফিরেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু বকর দেওয়ান, বায়োকেমিস্ট ফারুকুর রহমান, স্বাস্থ্যকর্মী উম্মে সালমা, রেনু খাতুনসহ কয়েকজন।

তাঁদের অন্য রকম সময়

মিটফোর্ড হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু বকর দেওয়ান সন্দেহ থেকে পরপর পাঁচবার করোনা পরীক্ষা করান। পঞ্চমবারের পরীক্ষায় গত ২৩ মে ‘পজিটিভ’ ফলাফল আসে।

>

পর্যাপ্ত সুরক্ষাসামগ্রী পরে করোনার নমুনা সংগ্রহ করতেন তাঁরা। এরপরও সংক্রমিত হয়েছেন। অনেকে সুস্থ হয়ে আবার কাজেও যোগ দিয়েছেন।

আবু বকর দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেদিন থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ শুরু করি, সেদিনই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিই, যেকোনো সময় আমি করোনায় আক্রান্ত হতে পারি। করোনার নুমনা পরীক্ষায় আমার করোনা পজিটিভ এলে আমি বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিতে থাকি। এর মধ্যে আমার ছেলের বউয়ের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তখন আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। বাসায় চিকিৎসা নিয়ে আমি সুস্থ হয়েছি, আমার ছেলের বউ সুস্থ হয়েছে।’ ৯ জুন আবার কাজে যোগ দেন আবু বকর। যত দিন সুস্থ থাকবেন, তত দিন কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছে তাঁর‌।

করোনাকে জয় করে কাজে যোগ দিয়েছেন মিটফোর্ড হাসপাতালের বায়োকেমিস্ট ফারুকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘গত ২০ মে আমি করোনায় আক্রান্ত হই। বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়েছি। সুস্থ হয়ে ১০ জুন আবার কাজে যোগ দিয়েছি।’ মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী রশিদ উন নবী বলেন, ‘করোনার এই সময়ে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে অন্যান্য হাসপাতালের মতো আমাদের হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইতিমধ্যে আমার হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ মোট ২০৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৬৮ জন সুস্থ হয়েছেন। ইতিমধ্যে কয়েকজন আবার কাজে যোগ দিয়েছেন।