কোয়ারেন্টিন শেষে নমুনা প্রতিবেদন এল 'পজিটিভ'

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নরসিংদীর পলাশে উপসর্গ নিয়ে এক নারী নমুনা দেওয়ার ১৫ দিন পর জানতে পেরেছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকার খবর। এর আগেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন পার হওয়ায় এবং উপসর্গগুলো আর না থাকায় তাঁকে পরীক্ষা না করে দেওয়া হয়েছে কাজে যোগদানের অনুমতিপত্র। এ নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে।

নরসিংদীর পলাশের ওই নারী রাজধানীতে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লকডাউন শুরু হওয়ার কিছুদিন পরই রাজধানী থেকে নরসিংদীর পলাশে নিজ বাড়িতে ফেরেন ওই নারী। ৭ জুন জ্বর, ঠান্ডা-কাশিসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে তিনি পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দেন। নমুনা দেওয়ার পর থেকে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে ১৪ দিন নিজ বাড়িতে তিনি কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। গত শনিবার তাঁর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হলে গতকাল রোববার তাঁকে দেওয়া হয় কাজে যোগদানের অনুমতিপত্র। এরপর ওই সন্ধ্যায়ই খবর আসে তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। এলাকার কয়েকজন জানিয়েছেন, ওই নারী এরই মধ্যে রাজধানীতে ফিরে গেছেন।
নরসিংদীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইব্রাহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘৭ থেকে ৯ জুন—তিন দিনে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংগৃহীত ৪০ জন ব্যক্তির নমুনা রাজধানীর আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এত দিন পেন্ডিং থাকার পর গতকাল রোববার সন্ধ্যায় আমরা হাতে পাই। ওই ফলাফলে একমাত্র ওই নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। কিন্তু এর আগেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হওয়ায় তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে কাজে যোগদানের অনুমতিপত্র দেওয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বলছে, নমুনা দেওয়ার ১৪ দিনের মধ্যেও যখন রিপোর্ট পজিটিভ না নেগেটিভ জানা যাচ্ছে না, অথচ ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হয়েছে আর কোনো উপসর্গও যেহেতু নেই, তাই হয়তো ওই নারীকে কাজে যোগদানের অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছে। সাধারণত ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হলে ধরে নেওয়া হয় তিনি করোনামুক্ত হয়ে গেছেন। তবু নিয়ম অনুযায়ী ১৫ ও ১৬তম দিনে পরপর দুটি নমুনা পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত করা হয়। ওই দুটি রিপোর্টে যদি ওই নারীর নেগেটিভ আসে, তবে তাঁকে করোনামুক্ত ঘোষণা দিয়ে নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।
পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দেওয়ার সময় সেখানে দেওয়া মুঠোফোন নম্বরটি সংগ্রহ করে ঘটনার বিস্তারিত জানতে দিনভর তাঁকে কল দেন এই প্রতিবেদক। কিন্তু প্রতিবারই তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল বেলাল বলেন, ‘ওই নারীর করোনা পজিটিভ আসার খবর জানার আগেই তাঁর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হয়েছে। তবে তাঁর কাজে যোগদানের অনুমতিপত্র কারা দিয়েছে, তা আমি নিশ্চিত নই। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিপোর্ট হাতে না পেলে আমাদেরই বা কী করার আছে? যখন নমুনা দিয়েছেন, ওই সময় তিনি পজিটিভ ছিলেন, এখন আমাদের আবার পরীক্ষা করে দেখতে হবে তিনি নেগেটিভ হয়েছেন কি না? আমি বিষয়টি দেখছি।’