শ্রম ভবনে প্যারাডাইস ক্যাবল শ্রমিকদের লাগাতার অবস্থান

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে প্যারাডাইস ক্যাবল কারখানার শ্রমিকদের সমাবেশ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে প্যারাডাইস ক্যাবল কারখানার শ্রমিকদের সমাবেশ।

নারায়ণগঞ্জের প্যারাডাইস ক্যাবল কারখানার শ্রমিকেরা ১৩ মাসের বকেয়া মজুরির দাবিতে গতকাল রোববার সকাল থেকে শ্রম ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ছিল। কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে শ্রমিকেরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের অদূরে কদমফুল ফোয়ারার কাছে সড়কে সমাবেশ করেন। পরে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিলের আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্যারাডাইস ক্যাবল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শ্রমিকনেতা দেলোয়ার হোসেন। সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কার্যকরী সভাপতি কাজী রুহুল আমীন, সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, শ্রমিকনেতা দুলাল সাহা, জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। সমাবেশ থেকে আন্দোলনরত শ্রমিকেরা তাঁদের বকেয়া পাওনার বিষয়ে সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত শ্রম ভবনে লাগাতার অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্যারাডাইস ক্যাবল লিমিটেড কারখানাটি গত ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বৈদ্যুতিক তার উৎপাদন করছে। দেশীয় বাজারের পাশাপাশি রপ্তানিতেও এই কারখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গত প্রায় এক বছর ধরে কারখানার মালিকপক্ষ উৎপাদিত পণ্য বিক্রয়লব্ধ অর্থ পুনর্বিনিয়োগ করছে না। এমনকি তারা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৭০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নেওয়া সত্ত্বেও এই লাভজনক কারখানাটির উৎপাদন স্থগিত রেখেছে।

বক্তারা বলেন, বহু বছর ধরে এই কারখানায় স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করা শ্রমিকেরা বর্তমানে বিনা বেতনে মানবেতর জীবনযাপন করছে। মালিকপক্ষ ১৩ মাস ধরে তাঁদের বেতন পরিশোধ করছে না। এর আগের তিন বছরের ওভারটাইম ভাতাসহ অর্জিত ছুটি, ঈদ বোনাসসহ অন্যান্য পাওনাও বকেয়া রেখেছে। করোনা পরিস্থিতি শুরুর বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই বকেয়া বেতন পরিশোধ ও কারখানা চালুর দাবিতে শ্রম মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে শ্রমিকেরা ধরনা দিচ্ছেন। এমনকি শ্রম প্রতিমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়েও মালিকপক্ষকে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে বাধ্য করতে পারেননি। গত ২১ এপ্রিল ২০২০ শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মহামারিকালে শ্রমিকদের বেঁচে থাকার জন্য দুই কিস্তিতে দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের চুক্তি করলেও মালিকপক্ষ পরে আর তাদের কথা রাখেনি। এ অবস্থায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তারাও দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন।