সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৮৫-তে পদার্পণ

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

আজ ৮৫ বছরে পা দিলেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এই ইমেরিটাস অধ্যাপকের আজ জন্মদিন। শ্রেণিকক্ষ থেকে অবসর নিয়েছেন বহু আগে। কিন্তু গবেষণা বা আন্দোলন থেকে নন। বরং তাঁর ব্যস্ততা আরও বেড়েছে। এখনো কাজেই ডুবে থাকতে চান। কাজের মধ্য দিয়ে নতুন সময়কে আবাহন করতে চান বাম প্রগতিশীল এই ভাবুক ও কর্মী।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ফোনে জন্মদিনের আগাম শুভেচ্ছা জানাতেই বললেন, ‘ওভাবে তো জন্মদিন উদ্‌যাপন করি না। তার প্রয়োজনও দেখি না। পেছনে ততটা তাকাই না। সামনের দিকেই চোখ রাখি। বয়স বাড়ছে। শুধু লক্ষ রাখি, কাজের ধারাবাহিকতা থাকছে কি না। সেটা জরুরি।’

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৬ সালে ২৩ জুন, বিক্রমপুরে। প্রায় শত গ্রন্থের রচয়িতা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী অধ্যাপক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের। কিন্তু তাঁর কৌতূহল ও কাজের পরিধি সাহিত্য ছাড়িয়ে বিচিত্র দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর গবেষণা ও লেখালেখির মূল অনুপ্রেরণা সাম্যের স্বপ্ন। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি সম্পাদনা করেছেন পত্রিকা, সম্পৃক্ত হয়েছেন জনমুখী আন্দোলনে। সেসবের পেছনেও একই স্বপ্নের তাড়না। বর্তমানে তিনি নতুন দিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক।

ইতিহাস সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর প্রিয় বিষয়। সাধারণভাবে জাতীয়তাবাদ এবং বিশেষভাবে বাঙালির ইতিহাসধারায় জাতীয়তাবাদের বিবর্তন ও প্রভাব তাঁর নানা গবেষণাগ্রন্থের প্রিয় বিষয়। ১০ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত তাঁর জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জনগণের মুক্তি বইটি ২০১৫ সালে প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থের পুরস্কার পেয়েছে। বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদকসহ বহু সম্মাননা পেয়েছেন।

কর্মজীবনে তিনি ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেটের সদস্য ছিলেন। দুবার তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের উপাচার্য নিয়োগের প্যানেলে মনোনয়ন পেলেও ভিসি পদ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ওসমানী উদ্যান, লালন ফকিরের আখড়া, আড়িয়ল বিল রক্ষাসহ নানা আন্দোলনে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যুক্ত থেকেছেন দেশের নানা গণতান্ত্রিক ও সামাজিক আন্দোলনে। বর্তমানে তিনি ‘সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংঘে’র আহ্বায়ক।