ফরিদপুরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়রসহ ১০১ জনের করোনা শনাক্ত

করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ আরও ১০১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের করোনা শনাক্তকরণ ল্যাব সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৪০৭।

ফরিদপুরের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মৃধা (৭৬) জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল সোমবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা দিয়েছিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) রেজাউল করিম জানান, লোকমান হোসেন মৃধা শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাঁকে গতকাল ভোরে ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী পরে তাঁকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে একটি কেবিনে চিকিৎসাধীন।

ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র শেখ মাহাতাব আলীও (৫৬) গতকাল ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নমুনা দিয়েছিলেন। শেখ মাহাতাব আলী বলেন, তাঁর করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে তিনি ভীত নন। তিনি আজও বিভিন্ন সামাজিক কাজে অংশ নিয়েছেন। তাঁর হালকা জ্বর ছাড়া শরীরে আর কোনো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, তিনি শহরের ঝিলটুলীর বাসভবনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ নিয়ে ফরিদপুরে নতুন শনাক্ত ১০১ জনের মধ্যে ১১ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন র‍্যাব সদস্য, ১ জন চিকিৎসক ও ১ জন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি রয়েছেন। উপজেলাভিত্তিক হিসাবে এই ১০১ জনের মধ্যে সদরের ৫৫ জন, ভাঙ্গায় ২৫ জন, নগরকান্দায় ১২ জন, বোয়ালমারীতে ৭ জন এবং মধুখালী ও সালথায় ১ জন করে রয়েছেন। নতুন শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০ জন নারী ও ৭১ জন পুরুষ। এই ১০১ জনের বয়সভিত্তিক হিসাব—শূন্য থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪ জন, ২১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৮ জন, ৪১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩০ জন এবং ৬১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন।

ফরিদপুরের করোনা শনাক্তকরণ ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের মোট ৩৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে মোট ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হয়েছেন ১৩২ জন। এর মধ্যে ফরিদপুরে ৬টি ফলোআপসহ ১০৭ জন, গোপালগঞ্জে ২৪ জন ও পাবনার ১ জন রয়েছেন।

আজ পর্যন্ত ফরিদপুরে করোনা শনাক্ত হলেন মোট ১ হাজার ৪০৭ জন। তাঁদের মধ্যে ফরিদপুর সদরে রয়েছেন ৫০২ জন, ভাঙ্গায় ২৮৩ জন, বোয়ালমারীতে ২০৭ জন, সদরপুরে ৯৫ জন, নগরকান্দায় ৮৯ জন, চরভদ্রাসন ৭৯, সালথায় ৫৭ জন, আলফাডাঙ্গায় ৫২ জন ও মধুখালীতে ৪৩ জন রয়েছেন।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ফরিদপুরে করোনা পরিস্থিতির অবনতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে করোনাপ্রবণ এলাকাগুলো বিচ্ছিন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি জনসচেতনতার বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘জনগণ সচেতন না হলে, নিয়ম না মানলে, আমাদের অনেক ক্ষেত্রে কিছুই করার থাকে না। আমরা চেষ্টা করছি জনগণকে সচেতন করতে, কিন্তু সফল হচ্ছি না।’

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ফরিদপুরে আজ একজন চিকিৎসকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ফরিদপুরে মোট ছয়জন চিকিৎসকের করোনা শনাক্ত হলো। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সর্বশক্তি কাজে লাগিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।’