বগুড়ার সিভিল সার্জন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক করোনা 'পজিটিভ'

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সামির হোসেন বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ‘পজিটিভ’ হয়েছেন। সঙ্গে করোনায় সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন জেলার আরও আটজন চিকিৎসক। এ ছাড়া জেলার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসিবুর রহমানও করোনা ‘পজিটিভ’ হয়েছেন।

এর বাইরে নতুন করে বগুড়া পল্লি উন্নয়ন একাডেমির পাঁচ কর্মকর্তাসহ আরও রেকর্ড সংখ্যক মানুষ কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন। বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় তাঁরা সবাই করোনা ‘পজিটিভ; হিসেবে শনাক্ত হন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সামির হোসেনের কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে। সামির হোসেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকও। দীর্ঘ সময় ধরে বগুড়ার প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় মধ্যরাতে বিনা পয়সায় ভাসমান ছিন্নমূল মানুষ এবং সুবিধাবঞ্চিতদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছেন তিনি। বগুড়ার স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে তিনি ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে বেশি পরিচিত।

দীর্ঘ এক দশক ধরে প্রথম আলো বগুড়া বন্ধুসভার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসা সামির হোসেন করোনাকালে বগুড়া শহরে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের নমুনা পরীক্ষায় অনন্য ভূমিকা পালন করে প্রশংসিত হন। নমুনা সংগ্রহে তাঁর এ উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম এগিয়ে আসেন। তিনি তাঁর ক্যারিয়ারের ঐতিহাসিক ব্যাট বিক্রির অর্থে সামির হোসেনের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহের জন্য বগুড়া শহরে চারটি বুথ স্থাপন করে সাড়া ফেলেন। এ বগুড়া পৌরসভার কাছ থেকে গাড়ি চেয়ে নিয়ে বগুড়া সদরের বিভিন্ন পাড়ামহল্লা ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করছিলেন সামির হোসেন।

এ ছাড়া বগুড়ার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসিবুর রহমানও নমুনা পরীক্ষায় করোনা ‘পজিটিভ’ হয়েছেন। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের উত্তরাঞ্চলীয় ব্যুরো প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বর্তমানে নিজের বাসাতে আইসোলেশনে রয়েছেন। এ ছাড়া নতুন করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরও আটজন চিকিৎসক করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনার সংক্রমণে রাজশাহী বিভাগে অতি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ‘রেড জোন’ ঘোষিত বগুড়া জেলায় এ পর্যন্ত কোভিড শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫১৬ জন। এর মধ্যে বগুড়া সদরেই সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ১ হাজার ৭৫৩। বেশি করে নমুনা সংগ্রহ করায় সদরে বেশি সংক্রমিত শনাক্ত সম্ভব হয়েছে। এর নেপথ্যে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রয়েছে সামির হোসেনের।

বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সিভিল সার্জন এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশনে নেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত অন্য চিকিৎসকেরাও হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকবেন।