নওগাঁয় পৌর মেয়রসহ এক দিনে সর্বোচ্চ ৮৫ জনের কোভিড শনাক্ত

নওগাঁ পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক ও দুই চিকিৎসকসহ নওগাঁয় আরও ৮৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। জেলায় এটি এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। 

এর মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলাতেই ৫০ জন। আজ শুক্রবার নওগাঁর ডেপুটি সিভিল সার্জন মুনজের-এ ইলাহী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে জেলায় কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৩২৫ জনে। এর মধ্যে ২০৪ জন সুস্থ হয়েছেন। মারা গেছেন চারজন।

নওগাঁ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের ল্যাবে নওগাঁর ২৭৯টি নমুনা পরীক্ষা হয়। গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই সব নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন ই-মেইলে আসে। ২৭৯টি নমুনার মধ্যে ৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে করোনা ‘পজিটিভ’ এসেছে। এর মধ্যে আগেই করোনা শনাক্ত দুই রোগীর দ্বিতীয় দফা পরীক্ষার প্রতিবেদন আছে। অর্থাৎ নতুন করে ৮৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

এই ৮৫ জনের মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁ পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক এবং সদর উপজেলার এক চিকিৎসক ও পোরশা উপজেলায় এক চিকিৎসক রয়েছেন। এ ছাড়া মহাদেবপুরে ১৩ জন, মান্দায় ছয়জন, বদলগাছীতে চারজন, রানীনগরে দুজন, পত্নীতলায় দুজন, ধামইরহাটে তিনজন, পোরশায় তিনজন, সাপাহার একজন ও আত্রাই উপজেলায় একজন রয়েছেন।

জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৩২৫ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ১৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ নওগাঁ পৌর এলাকা। এ পৌর এলাকায় এ পর্যন্ত ১২৮ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ পর্যন্ত ৩২৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে এই সংখ্যা এত দিনে আরও বেশি হতে পারত। কারণ, নওগাঁয় নমুনা পরীক্ষায় ফল আসছে খুব দেরিতে। নমুনা পরীক্ষার ফল আসতে সাত থেকে ১২ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নওগাঁ থেকে ৫ হাজার ৪১৬টি নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ২৬৫টির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এখনো ১ হাজার ১৫১টি নমুনা পরীক্ষায় অপেক্ষায় রয়েছে। নমুনা পরীক্ষার ফল আসতে দেরি হওয়ায় নওগাঁয় করোনা সংক্রমণ আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশ্লেষকেরা।

ডেপুটি সিভিল সার্জন মুনজের-এ ইলাহী জানান, মেয়র নজমুল হকসহ কোভিড-১৯-এ নতুন আক্রান্ত ৮৫ জনের অধিকাংশের শরীরেই তেমন কোনো জটিল উপসর্গ নেই। তাঁদের সবাইকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) থেকেই চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা সব ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হবে।