নতুন ঘর পেয়ে খুশি বড়লেখার লায়লা বেগম

মৌলভীবাজারের বড়লেখার লায়লা বেগমের নতুন ঘর। ছবি: প্রথম আলো
মৌলভীবাজারের বড়লেখার লায়লা বেগমের নতুন ঘর। ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের বড়লেখার লায়লা বেগমের ঘরটা এমনিতেই নড়বড়ে ছিল। ঝড়-তুফানের সময় ভয়ে থাকতেন। এর মধ্যে একদিন ঝড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের একটি খুঁটি ভেঙে পড়ে ঘরের উপর। ঘরটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চোখের সামনে যখন প্রবল অন্ধকার, তখন আলো হয়ে পাশে দাঁড়ায় স্থানীয় প্রশাসন। মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে আধা পাকা নতুন ঘর পেয়ে অনেক খুশি তিনি।

বড়লেখা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার করমপুর গ্রামে ৩ জুন ঝড়ে ট্রান্সফরমারসহ বিদ্যুতের একটি খুঁটি পড়ে লায়লা বেগমের বসতঘর দুমড়ে–মুচড়ে যায়। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পান বসতঘরের বাসিন্দারা। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। দিনমজুর ছেলের উপার্জনে কোনো রকমে সংসার চলে। এর মধ্যে নতুন ঘর কীভাবে বানাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি।

লায়লা বেগমের ঘর ভেঙে পড়ার কথা জানতে পারেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তাঁর নির্দেশে পরের দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ইউএনও ঘর হারানো পরিবারটিকে তাৎক্ষণিক কিছু খাদ্য সহায়তা এবং পাঁচ হাজার টাকার একটি চেক দেন। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে নতুন করে ঘরটি তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। দুই সপ্তাহের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের 'আশ্রয়ণ-২' প্রকল্পের আওতায় 'যার জমি আছে ঘর নাই, তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ' কর্মসূচি থেকে আধি পাকা একটি ঘর তৈরি করা হয়েছে। এক লাখ টাকায় আধা পাকা ঘর ও একটি শৌচাগার নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নতুন ঘরে ওঠেছেন লায়লা বেগম।

লায়লা বেগম বলেন, নতুন ঘর পাওয়ার কথা তিনি ভাবতেও পারছিলেন না। এখন নতুন ঘর পেয়ে মনে অনেক শান্তি পাচ্ছেন। আগে ঝড়-বৃষ্টির সময় ভয়ে ঘুমুতে পারতেন না। এখন আর সেই ভয়ও থাকবে না।

বড়লেখার ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লায়লা বেগমের ঘর ভেঙে পড়ার পর মন্ত্রীর নির্দেশে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তাদের পুরো ঘর ভেঙেচুরে যায়। নতুন করে ঘর বানানোর সামর্থ্য ছিল না তাদের। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে নতুন ঘরটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।'